বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন মিনু

বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। রোববার (৭ মার্চ) দুপুরের দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন। বক্তব্যে ষড়যন্ত্র না খোঁজার অনুরোধ জানান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র।
মিজানুর রহমান মিনুর পক্ষে রাজশাহী নগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন ই-মেইলে বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন। যোগাযোগ করা হলে তিনি এই বিবৃতির বিষয়টি স্বীকার করেন।
বিবৃতিতে তিনি জানান, আমার বক্তব্যের জন্য যারা ব্যথিত ও মর্মাহত হয়েছেন, আমি তাদের নিকট দুঃখ প্রকাশ করছি।
তিনি আরও জানান, এই মহানগরীতে জন্মগ্রহণ করে দীর্ঘদিন রাজশাহীবাসীকে নিয়ে রাজনৈতিক নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছি। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ সব আন্দোলনে জনগণকে পাশে পেয়েছি। সুতরাং কোনো ব্যক্তি বিশেষ বা গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে আক্রোশমূলক বক্তব্য দেওয়া আমার স্বভাববহির্ভূত। তাই আমার বক্তব্যে ষড়যন্ত্র না খোঁজার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
২ মার্চ রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দেন মিজানুর রহমান মিনু। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মিনু বলেন, ‘আজ রাত, কাল আর সকাল নাও হতে পারে। ’৭৫ মনে নাই?’ সেই সমাবেশে মিনু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও কটাক্ষ করে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র এই নেতা।
মিনুর এই বক্তব্য প্রচারের পর থেকেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে নগর আওয়ামী লীগ। পরদিন (৩ মার্চ) এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সেখানে মিনুকে জাতির সামনে ক্ষমা চাইতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। ক্ষমা না চাইলে মিনুর বিরুদ্ধে মামলা করার ঘোষণা দেন লিটন।
মিজানুর রহমান মিনুর এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। গত শুক্র ও শনিবার বিষয়টি নিয়ে তিনি গণমাধ্যমে কথা বলেন। প্রশ্ন তোলেন, মিনু এত সাহস কোথায় পেলেন?
এদিকে, দলীয় ফোরামে মিনুর বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় নগর আওয়ামী লীগ। সোমবার (৮ মার্চ) আদালতে মামলাটি করার কথা। এছাড়া ৯ মার্চ রাজশাহীতে বিক্ষোভ সমাবেশেরও কর্মসূচি দেওয়া হয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর রাজশাহী মহানগর বিএনপির এক বিক্ষোভ সমাবেশে মিনু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যার সঙ্গে তুলনা করে আপত্তিকর বক্তব্য রাখেন। এ নিয়ে ওই সময় বিক্ষোভ করে নগর আওয়ামী লীগ। এরপর ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন মিনু।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর