বাবা-মায়ের পাশে শায়িত হলেন ড. আলাউদ্দিন আহম্মদ

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহম্মদকে রাষ্ট্রীয় মার্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে নিজ গ্রাম কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তৃতীয় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
বুরুদিয়া বাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রহমত উল্লাহ নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন। তার নামাজে জানাজায় অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহম্মদের মৃত্যু হয়। বুধবার বেলা ১১টার দিকে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে তার মরদেহ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়ায় তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
বুরুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার নামাজে জানাজায় জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার রাসেল শেখ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম মস্তুফা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজাল, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহীদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, পাকুন্দিয়া পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম আকন্দসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহম্মদ ১৯৪৭ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি, ১৯৮২ সালে জাপানের কানাজাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএস এবং ১৯৮৫ সালে জাপানের তোহোকু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ১৯৭৩-১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ড. আলাউদ্দিন আহম্মদ ১৯৮৫ সালে সহকারী অধ্যাপক, ১৯৮৭ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৯২ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
তিনি ১৯৯৮ সালের ১৮ জুলাই থেকে ১৯৯৯ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। এর আগে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৯৯ সালের ৯ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে ১৯৯৯ সালের উপ-নির্বাচনে ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ (পাকুন্দিয়া-হোসেনপুর) বর্তমান কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
এসকে রাসেল/এমএএস