কৃষকদের ব্যবহৃত রাস্তায় ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ বন্ধের দাবি

রাস্তার ওপরে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাজশাহীর পবা কাদিপুর দেশলাপাড়ার কৃষকরা। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, পবা কাদিপুর দেশলাপাড়ার রাস্তাটি ১০০ মিটার দীর্ঘ। এই রাস্তা ব্যবহার করে জমি থেকে ফসল আনা নেওয়া করেন ৫০০ জনের বেশি কৃষক। এখন রাস্তাটির ওপর ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু রাস্তার ওপরে ঘর নির্মাণ করা হলে বিলে এলাকায় থাকা কৃষি জমিতে যাওয়ার একমাত্র পথটি বন্ধ হয়ে যাবে। রাস্তাটি বন্ধ না করে এই উপজেলায় আরও খাস জমি রয়েছে। সেখানে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণের দাবি জানায় কৃষকেরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত গিয়াস উদ্দিনের ওই বিল এলাকায় ১০ বিঘা জমি রয়েছে। এছাড়া মাজদার আলী, আব্দুল গফুর, গোলাম কবির কহিদ, গোলজার হোসেনের ১২ থেকে ১৫ বিঘা জমি রয়েছে। এছাড়া আবুল কালামের ৭ বিঘা জমি রয়েছে। তারা দেশলাপাড়া বিলের এই রাস্তাটি ব্যবহার করে জমির ফসল তুলে নিয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল সালাম জানান, রাজশাহী জেলার পবা উপজেলাধীন তিন নম্বর দামকুড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দেশলাপাড়া গ্রামের কাদিপুর মৌজার খতিয়ান নম্বর ১, দাগ নম্বর ১৫০৩, খতিয়ানে বর্ণিত ৭০ শতক রাস্তার জমিতে প্রায় ৩ মাস আগে ভূমিহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণের জন্য পবা উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক জরিপ করা হয়। ওই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়, এস.এ ও আরএস খতিয়ানে জায়গাটি এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করছেন। এখানে রাস্তার ওপর গৃহ নির্মিত হলে অত্র এলাকার জনসাধারণ ও কৃষকদের ক্ষতি হবে।
কারণ কৃষকগণ উক্ত রাস্তাটি ব্যবহার করে কৃষ্ণকলশ মাঠের ফসলাদী মাঠ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। হঠাৎ করে প্রায় ২ (দুই) মাস আগে রাস্তাটির ওপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ঘর নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করলে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়। পরে গোলজার হোসেন এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা রাজশাহীর পবা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পটি বন্ধ চেয়ে রাষ্ট্রকে বিবাদী করে জনস্বার্থে একটি মামলা দায়ের করেন।
আব্দুল সালাম আরও বলেন, মামলায় পর আদালতের আদেশে ঘর নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে রাজশাহী জজ আদালত শীতকালীন এক মাস ছুটি থাকায় বিবাদীগণ সু-কৌশলে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে গত ১৮ ডিসেম্বর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর উপস্থিতিতে, পুলিশ নিয়ে এসে আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে উক্তস্থানে পুনরায় কাজ আরম্ভ করেন। যা সম্পূর্ণ আদালত অবমাননার শামিল। এলাকাবাসী জানতে চায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেন আদালতের আদেশ অমান্য করে কাজ করছেন। কারণ তারা পুনরায় কাজ চালুকরণের কোনো প্রকার আদালতের আদেশ দেখাতে পারেনি। আমরা উনাকে কাজ বন্ধের জন্য অনুরোধ করলেও তিনি আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত না করে কাজ চালু রেখেছেন।
তিনি জানান, আমরা আদালতের আদেশ অমান্য করে অস্থায়ী নিষেধোজ্ঞা অমান্য করে আবারও ঘর নির্মাণ করায় আইনি সহায়তার জন্য দামকুড়া থানায় জিডি করতে যাই। কিন্তু থানা থেকে জানানো হয়, তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে জিডি নিতে পারবে না। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বিধায় চাচ্ছি আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিস্পত্তি হোক।
বিষয়টি নিয়ে পবা উপজেলা কর্মকর্তা (ভূমি) অভিজিৎ সরকার ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লসমি চাকমার মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলে তারা রিসিভ করেনি। তাই এই বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।