শিক্ষক নেই, বিদ্যালয়ে এসে ফিরে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

নীলফামারীর জলঢাকার পশ্চিম বালাগ্রাম কালীর ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষক না আসার অভিযোগ উঠেছে। সময় মতো শিক্ষক না আসায় বন্ধ থাকে শ্রেণিকক্ষ, তাই ফিরে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে বিদ্যালয়টিতে কমছে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। শিক্ষকদের অবহেলায় কমেছে শিক্ষার হার। এমনি অভিযোগ স্থানীয়দের।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় বিদ্যালয়টি গিয়ে দেখা যায়, আসেননি কোনো শিক্ষক। সেখানে ২০ মিনিট অপেক্ষার পর কয়েকজন শিক্ষার্থী আসলেও তারা কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ফিরে যায়। এরপর ৯টা ৫১ মিনিটে আসেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক পুনিল চন্দ্র রায়। এর কয়েক মিনিট পর প্রায় ১০টার দিকে বিদ্যালয়ে আসেন দুজন সহকারী শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানটিতে মোট পাঁচজন শিক্ষক। এর মধ্যে একজন প্রশিক্ষণে আর অন্যজন ১০টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত অনুপস্থিত ছিলেন।
এদিকে স্থানীয় ও অভিভাবকদের অভিযোগ, সঠিক সময়ে শিক্ষক স্কুলে না আসায় দিন দিন কমছে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা। কমছে শিক্ষার হার। শিক্ষকদের অবহেলায় ঝড়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, স্কুলের মাস্টার আসে দেরিতে। বাচ্চাগুলা এ জন্যে দেরিতে স্কুল যায়। আর পড়াশুনা তো হয় না। বেতন পাইলেই হইলো। বড় বড় অফিসাররা এগুলা দেখে না।
সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার বলেন, আমি দূর থেকে আসি। রাস্তায় আসতে আমার ৩টি গাড়ি পরিবর্তন করতে হয়। বাচ্চা নিয়ে আসতে একটু অসুবিধা হয়। আমি নিয়মিত সঠিক সময়ে আসি আজকে একটু লেট হয়েছে।
বিদ্যালয় থেকে ১ কিলোমিটার দূরে বাড়ি সহকারী শিক্ষক রিক্তা রানীর। তিনি বিদ্যালয়ে আসেন ৯ টা ৫৩ মিনিটে। দেরিতে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসতে আসতে একটু লেট হয়েছে। পারিবারিক সমস্যা ছিল।
প্রধান শিক্ষক অনীল চন্দ্র রায় বলেন, আমরা সঠিক সময়ে স্কুলে আসি। মাঝে মধ্যে একটু এমন হয়। আজ হয়ত পারিবারিক একটু সমস্যা ছিল এ জন্য লেট করেছেন। ১০টা ৩৭ মিনিটেও আরও একজন শিক্ষক অনুপস্থিতের বিষয়ে তিনি বলেন, উনার বাসা আমার বাড়ির কাছেই, কেন আসেনি জানি না।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানালে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, স্কুল খোলা থাকলে পরীক্ষা বা নিয়মিত ক্লাস যাই হোক, সরকার নির্ধারিত সময় সকাল ৯টায় অবশ্যই শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে হবে। অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই। উপজেলা কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখাশোনা করেন। তবুও এমন হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরিফুল ইসলাম/আরকে