ট্রাজেডির পর অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে চলছে বরগুনার লঞ্চগুলো

হৃদয় বিদারক অভিযান-১০ ট্রাজেডির এক বছর পূর্ণ হলো আজ। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চ অভিযান-১০ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৪৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। যাদের অধিকাংশই বরগুনার। এছাড়াও আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
এ ধরনের প্রাণহানির পুনরাবৃত্তি এড়াতে ব্যাপক সাবধানতা অবলম্বন করছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বরগুনা-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী সকল লঞ্চে প্রয়োজনের চেয়েও বেশি অগ্নিনির্বারক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে লঞ্চ মালিকরা। এতে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকাগামী কয়েকজন যাত্রী বলেন, লঞ্চের কথা শুনলে এখনও আঁতকে উঠি। গত বছর অভিযান ১০ এর কথা সবারই জানা। তবে বর্তমানে এ রুটের লঞ্চগুলোতে পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই আমাদের আতঙ্ক অনেকটাই কমে গেছে।
রাজিব হোসেন নামে আরেক যাত্রী বলেন, অভিযান লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডের পরে বহুদিন লঞ্চে যাতায়াত করিনি। কিন্তু লঞ্চে এখন প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে। এতে আমরা যাত্রীরা কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত।
লাভলু দফাদার নামে আরেক যাত্রী বলেন, জন্ম-মৃত্যু আল্লাহর হাতে। তবুও আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আগের তুলনায় বরগুনার লঞ্চগুলোর সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। অভিযান ১০ লঞ্চেও পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকলে প্রানহানি কম হতো বলে আমি মনে করি।
এমকে শিপিং লাইন্সের বরগুনা আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক এনায়েত হোসেন বলেন, বরগুনা-ঢাকা রুটে আমাদের ৪টি লঞ্চ চলাচল করে। নৌযানগুলোতে আমরা প্রয়োজনের তুলনায় অধিক সুরক্ষা সরঞ্জাম রেখেছি। ডেকে ডেকে পাম্পের পাইপ টেনে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে এসব পাইপ থেকে পানি প্রবাহিত হবে। ইঞ্জিনরুমে কয়েক স্তরের সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রয়েছে হস্তচালিত যন্ত্রও।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দিনগত রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চ এমভি অভিযান-১০ এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় ৪৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদের মধ্যে ৪১ জনেরই বাড়ি বরগুনায়। ১৮ জনকে বিভিন্ন নমুনা দেখে শনাক্ত করে নিয়ে গেছে স্বজনরা। বাকি ২৩ জনকে বরগুনার পোটকাখালী গণকবরে ২১ কবরে সমাহিত করা হয়েছে।
এদিকে নিখোঁজ ৩০ জনের বিপরীতে ৪৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১৪ জনকে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করতে পেরেছে পরিবার। তবে এখনও কাউকে হস্তান্তর করা হয়নি। এ ঘটনায় এখনও ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। শনাক্ত করে নিয়ে যাওয়া ১৮ মরদেহের পরিবারকে নৌপরিবহন তহবিল ট্রাস্টি বোর্ড থেকে দেড় লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। যারা এখনও ক্ষতিপূরণ পায়নি তারা শিগগিরই ক্ষতিপূরণ পাবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
খান নাঈম/এমএএস