চায়ের রাজ্যে সাংবাদিকদের একদিন
মৌলভীবাজার জেলাকে প্রকৃতি আপন মহিমায় সাজিয়েছে। চারপাশে উঁচু পাহাড়। পাহাড়ের গা-ঘেঁষে চায়ের বাগান। সেই বাগানেই আনন্দময় একটি দিন কাটালেন মৌলভীবাজারের সাংবাদিকরা।
শনিবার (১৩ মার্চ) দিনব্যাপী ছিল মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ইমজার যৌথ আয়োজনে বনভোজন। এ আয়োজন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
সবুজ চা বাগানে চোখে পড়ল লম্বা লম্বা গাছের সারি। জেলার রাজনগরের মধ্যখানেই রাজনগর চা বাগান। বাস ভর্তি করে সবাইকে নিয়ে সেখানেই হাজির চালক। দৃষ্টিনন্দন ম্যানেজার বাংলো। সেখানে সবাই সকালের নাস্তা সেড়ে নিলেন। সবার গায়ে হাকালুকি, মাধবকুন্ড আর লাউয়া ছড়ার দৃশ্য আকা রঙিন পোশাক।
এরপর একে একে সবাই বের হলেন বাগান দর্শনে। সব সহকর্মী একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা বলে অভিমত জানালেন অনেকে।
যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সবাই সহকর্মী। সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকি। আজ সবাইকে একসঙ্গে দেখে অনেক ভালো লাগছে। আমাদের চিরচেনা বাগানে সবাইকে নিয়ে এসে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে।
বাগানের মধ্যে হেটে চলার কিছুক্ষণ পরই এলো একটি ঐতিহাসিক বট গাছ। সেই গাছের পাশেই বিস্তৃর্ণ মাঠ। সেখানেই হবে ফুটবল ম্যাচ। পত্রিকার ও টেলিভিশন সাংবাদিকদের দুই দল মাঠে নামল। আনন্দদায়ক খেলায় অনেক হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলো। কেউই গোল করতে পারলেন না। শেষে টাইব্রেকারে গোল করে জিতলেন টিভি সাংবাদিকরা।
পত্রিকা দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন সমকালের জেলা প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসলে জয় পরাজয় বড় কথা নয়। আজ আমরা সহকর্মীরা যে একসঙ্গে মাঠে নেমে খেলতে পেরেছি এটাই বড় প্রাপ্তি। আমাদের এ বন্ধন চিরকাল যেন থাকে।
আঁকাবাঁকা পথ মাড়িয়ে সবাই পৌঁছলেন বাংলোতে। পাশেই ছোট একটি লেক। পাহাড়ের চূড়া থেকে পুরো লেকের মনোরম দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। দুপুরে খাবার শেষে দ্বিতীয় ধাপের খেলার আয়োজন হলো। সেখানে ছিল শক্তির লড়াই। বল নিক্ষেপ। স্মৃতি পরীক্ষা ইভেন্ট। প্রতিটি খেলায় তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। কেউ জিতেছেন, কেউ হেরেছেন। কিন্তু সবাই খুশি।
মৌলভীবাজার ইমজার সাধারণ সম্পাদক বকসি মিছবাহউর রহমান বলেন, ইমজা টিভি সাংবাদিকদের সংগঠন। করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকদের পিকনিকের আয়োজন হচ্ছিল না। আজ প্রেসক্লাব ও ইমজা যৌথভাবে আমরা সম্পন্ন করতে পারলাম। এজন্য আমরা সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্ত ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সাংবাদিকরা সারা বছর কর্মব্যস্ত থাকি। আজ এ বনভোজনের মাধ্যমে সবাই একত্রিত হলাম। সবাই একটি আনন্দময় উৎসব উদযাপন করলাম। মূলত সাংবাদিকদের ব্যস্ততা কাটিয়ে যাতে সবাই আনন্দ উদযাপন করতে পারেন এজন্য মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব ও ইমজা যৌথভাবে বনভোজনের আয়োজন করে।
ওমর ফারুক নাঈম/এমএএস