শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে বন্ধ রেশম কারখানার উৎপাদন

বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে রাজশাহী রেশম কারখানার শ্রমিকরা প্রায় এক সপ্তাহ থেকে কর্মবিরত পালন করছেন। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে রেশম কারখানা শোরুমের প্রধান ফটকের সামনে মাটিতে বসে কর্মবিরতি পালন করেন তারা। 

শ্রমিকদের অভিযোগ, সপ্তাহব্যাপী কর্মবিরতি পালন করলেও রেশম বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। শ্রমিকদের বকেয়া বেতনের বিষয়েও তারা কথা বলেননি।

এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে রাজশাহী রেশম কারখানার শ্রমিকরা। সেই দিন থেকে রেশম কারখানা শোরুমের প্রধান ফটকের সামনে বসে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।

শ্রমিক শামসুল আলম জানান, এই শ্রমিকরা মিলে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১১০ গজ কাপড় তৈরি করে। তারা কাজ করলে এই সাতদিনে ৭৭০ গজ কাপড় তৈরি হতো। কিন্তু কর্মবিরতির কারণে এই কাপড় তৈরি হয়নি। এই কাপড় বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে শোরুমে বিক্রি হয় ৭৫০ টাকা গজ হিসেবে। এক সপ্তায় প্রায় পৌনে এক লাখ টাকার কাপড় উৎপাদন হয় রেশম বোর্ডের কারখানায়। 

কারখানার শ্রমিক মো. লালন বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ছয় মাসের বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছি। এই কয়দিন কাজ সম্পন্নভাবে বন্ধ রয়েছে। কর্মসূচী চলাকালে প্রথম দিন খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে আর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের হাজিরা তুলছেন না কর্তৃপক্ষ। তারপরেও কর্মবিরতি অব্যাহত রাখা হয়েছে। আমাদের যতদিন বেতন দেবে না, আমরা কাজে যোগদান করব না। একইভাবে রেশম বোর্ড, বোর্ডের গবেষণা ও কারখানার শ্রমিকদের বেতন বন্ধ রয়েছে। তারা আলাদা আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বেতন দেওয়া হয় মাত্র ৩০০ টাকা। আমরা ডেলি লেবারের কাজ করি। কর্মসূচি পালন করছি, বেতনের দাবিতে। তবে প্রথমদিন ছাড়া হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেয়নি। সেই বিষয়টা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেছেন, রেশম বোর্ড থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তারা (শ্রমিকরা) কাজ করছে না। তাই তাদের খাতা স্বাক্ষর করতে দেওয়া হবে না। এখন সম্পন্নরূপে প্রোডাকশান বন্ধ। আমাদের বেতন দিলে আমরা কাজে যাব।’  

কারখানার শ্রমিক খাইরুল ইসলাম বলেন, শুধু কর্মচারীদের বেতন বাকি আছে। কর্মকর্তাদের বেতন হচ্ছে ঠিকমতো। তারা (কর্মকর্তা) আমাদের কাছে আসছেন না, বসছেন না। আমাদের বিষয়ে তাদের (কর্তৃৃপক্ষ) কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তারা আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বা আশ্বাস দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় আমরা কীভাবে চলব। বাড়ির ভাড়া বাকি, দোকানে বাকি পড়েছে। তারা বাকি দিতে চাচ্ছে না। ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্টে আছি। 

এ বিষয়ে আঞ্চলিক রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কাজী মাসুদ রেজা বলেন, শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে আমরাও চেষ্টা করছি। আজ সভা আছে। ধারণা করা হচ্ছে দ্রুতই তাদের বেতন হয়ে যাবে। বেতন শুধু শ্রমিকদের বাকি না কর্মকর্তাদের বাকি আছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শুধু মাস্টার রোলের শ্রমিকদের বেতন বাকি আছে। বিস্তারিত সন্ধ্যায় জানানো হবে।

আরকে