বঙ্গবন্ধুর জন্য একত্রে ৫ লক্ষাধিক মানুষের দোয়া

ভিন্নধর্মী আয়োজনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে পালন করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। বুধবার (১৭ মার্চ) দিবসটি উপলক্ষে প্রযুক্তির মাধ্যমে নানা শ্রেণি-পেশার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষকে দোয়া ও মোনাজাতে একত্রে যুক্ত করা হয়। এছাড়াও খুলনা জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও হেফজখানায় ১৯ হাজার ২০০ বার পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে খতম সম্পন্ন করা হয়।
দিবসটির মূল আয়োজন ছিল খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে। সেখানে বিকেলে ৬৬৬৬ জন আলেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সমবেত হয়ে আসরের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যগণ এবং মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দেওয়া ৩০ লাখ শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনার এক হাজার ৮০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, এক হাজার ২০০ মসজিদের মুসল্লিসহ পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ এই দোয়ায় একত্রে অংশগ্রহণ করেন।
দোয়া অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সৈয়দ রবিউল আলম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার এসএস শফিউল্লাহ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ প্রমুখ অংশ নেন। দোয়া পরিচালনা করেন খুলনা টাউন জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. আবু সালেহ।
এর আগে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর হৃদয় হোক রঙিন’।
সকালে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন খুলনা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ও মহানগর কমান্ড, কেসিসির মেয়র, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মহানগর, জেলা ও অংগসংগঠনসমূহ, স্কুল-কলেজ, পেশাজীবী সংগঠনসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিভিন্ন মসজিদে বাদ জোহর মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠান এবং মন্দির, গির্জাসহ অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার ও এতিমখানায় বিশেষ খাবার পরিবেশন ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে স্মরণিকা, গ্রন্থ ও দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ করা হয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়কদ্বীপ, সকল সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা, মুজিববর্ষ উদযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন, সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। সন্ধ্যায় আতশবাজির আয়োজন করা হয়। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও শিশুদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর