নীলফামারীতে শীত বাড়ছে, রোগী বাড়ছে হাসপাতালে

হেমন্তের শুরুর দিকেই শীতের আগমনী ধ্বনি বেজে উঠেছিল উত্তরের জেলা নীলফামারীতে। এরপর দুই সপ্তাহ ধরে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। মেঘলা আকাশ, সঙ্গে আছে ঘন কুয়াশা। সন্ধ্যা নামতেই পথঘাট, হাটহাজার জনশূন্য হয়ে পড়ে। রাতে তাপমাত্রা আরও কমে যায়। হাড়কাঁপানো শীতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে এখানকার স্বাভাবিক জীবনযাপন। গত দুই দিনে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্য উত্তাপ ছড়ালেও সন্ধ্যার পর বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা।
এবার নভেম্বর মাস থেকেই নীলফামারীতে শীত শুরু হইছে। দু-এক দিন পরপর প্রচুর শীত নামে। এতে জনজীবন থেমে যায়। সকালে প্রচুর ঠান্ডা ও কুয়াশা থাকে। ফলে কাজে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সবাইকে
ডিমলা আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রমতে, গত দুই সপ্তাহে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীতজনিত রোগের প্রকোপে জেলার সব কটি হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের ভিড় বেড়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন।
উত্তরা ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিক নীলফামারী পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিম ইসলাম জানান, এবার নভেম্বর মাস থেকেই নীলফামারীতে শীত শুরু হইছে। দু-এক দিন পরপর প্রচুর শীত নামে। এতে জনজীবন থেমে যায়। সকালে প্রচুর ঠান্ডা ও কুয়াশা থাকে। ফলে কাজে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সবাইকে।
সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের মালেকা বেওয়া বলেন, গতবারের শীতে মুই একটা কম্বল পাও নাই। কম্বলের জন্য মেম্বরক কয়েক দিন কচনু। দিবার চাইচিল। কিন্তু পরে আর দেয় নাই। এবার আর চাইম না, আল্লাহই দিন নিয়া যাইবে।
জেলার ছয়টি উপজেলায় শীতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার কম্বল বিতরণ করেছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের পাশেই ঝুপড়ি ঘরে থাকেন আইয়ুব আলী। আক্ষেপ করে বলেন, শীত আইসে শীত যায়, হামার খবর কাহো নেয় না। কাজ কাম নাই, তাতে যে ঠান্ডা বাচ্চাকাচ্চা নিয়া শীতের রাইত কাটা খুবই কষ্টের।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা অমল কুমার রায় ঢাকাপোস্টকে জানান, শীতের কারণে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও একলামশিয়া রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর অনেক চাপ। অসুস্থ রোগীদের সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র থেকে জানা যায়, জেলার ছয়টি উপজেলায় শীতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার কম্বল বিতরণ করেছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
এনএ