টিসিবির পণ্য না পেয়ে ডিলারকে অবরুদ্ধ

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় টিসিবির পণ্য না পেয়ে সফিয়ার রহমান নামে এক ডিলারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয়রা। ওই সময় রাতের আঁধারে পণ্য পাচারে অভিযোগ তুলে বিচারের দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন।
রোববার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার তুষভান্ডার খেলার মাঠে পণ্য বিক্রির সময় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডিলারসহ টিসিবির ট্রাক্টরটি উদ্ধার করেন। পরে ডিলার পুনরায় পণ্য বিক্রির আশ্বাস দিলে তাকে ইউপি সদস্যদের জিম্মায় দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, সকালে ৯০২ জন সুবিধাভোগী উপজেলার তুষভান্ডার খেলার মাঠে টিসিবির পণ্য কিনতে আসেন। তিনটি ওয়ার্ডের সুবিধাভোগীরা সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকার পরও টিসিবির গাড়ি না আসায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে অভিযোগ করেন। পরে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা ডিলারকে জানালে সাড়ে ৩টার দিকে টিসিবির পণ্য নিয়ে আসেন। ওই সময় সুবিধাভোগীদের তোপের মুখে পড়েন ডিলার সফিয়ার রহমান।
এদিকে, পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু করলেও কিছুক্ষণের মধ্যে পণ্য শেষ হয়ে যায়। ফলে মানুষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা ডিলারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। পরে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা ডিলার সফিয়ার রহমানকে সুবিধাভোগীদের মধ্যে পুনরায় পণ্য বিক্রি করার আশ্বাস দিতে বলেন। এসময় টিসিবির পণ্য আবারও বিক্রি করবেন বলে আশ্বাস দিলে তাকে ছেড়ে দেন স্থানীয়রা।
৬নং ওয়ার্ডের গোলজার হোসেন বলেন, মাঠে তেল, চিনিসহ টিসিবির মালামাল বিক্রি করতে আসে ডিলার। কিন্তু আমাদের বিষয়টি জানানো হয়নি। সারাদিন অনেক অসহায় মানুষ মালামালের জন্য গেলেও নানা ভুল-ত্রুটির অজুহাতে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। রমজান মাসে মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। রাতের আঁধারে খালি কার্টন রেখে টিসিবির পণ্য দিয়ে ঠিক করেনি। বিষয়টি টের পেয়ে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ট্রাকটি অবরুদ্ধ করি।

ডিলার সফিয়ার রহমান বলেন, আমাকে খাদ্য গুদাম থেকে ২টায় পণ্য দেওয়া হয়েছে। তাই মাঠে বিতরণ শুরু করেছি সাড়ে ৪টার দিকে। এ কারণে সন্ধ্যা হয়ে গেছে মালামাল বিতরণ করতে। পণ্য সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, টিসিবির পণ্য বিতরণের যে কার্ডটি করা হয়েছে সেটি স্ক্যান করতে হয়েছে। তাই অনেকজনকে মালামাল দিতে পারিনি।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম গোলাম রসূল বলেন, বিষয়টি শোনার পরে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে ট্রাকটি পরিষদে চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম জানান, বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এসএসএইচ/