খুলনায় হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন

খুলনার তেরখাদার আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামের আলোচিত পলাশ শেখ ওরফে সবুজ হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে এ মামলার অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৯ এপ্রিল) খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের তকুব্বর ফকিরের ছেলে রোমান ফকির ও আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামের মহিউদ্দিন মোল্লার ছেলে মিলু মোল্লা। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি পলাতক ছিলেন। এছাড়া খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মুরাদ শরীফ ও খসরু মোল্লা।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আলমঙ্গীর হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তেরখাদা উপজেলার আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে পলাশ ওরফে সবুজ। হত্যা মামলার ৩নং আসামি মিলু মোল্লার বাড়িতে পলাশের প্রায় যাতায়াত ছিল। এ কারণে মিলু মোল্লা তার স্ত্রী রিক্তা বেগম ও পলাশকে সন্দেহ করত। এ অবস্থায় মিলু মোল্লা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২০০৯ সালের ৫ নভেম্বর রাত ৯টায় বাড়ি থেকে পলাশকে ডেকে নেন। তারপর থেকে অনেক খোঁজ নেওয়ার পর পলাশের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পলাশের পরিবার গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে আসামি মিলু মোল্লা তার স্ত্রীর অবৈধ প্রেমকে ঠেকানোর জন্য অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় বারাসাত গ্রামের উত্তর পাশে বিলে নিয়ে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনার পর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
পরবর্তীতে ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর আসামি রোমান ফকির তার শ্বশুরবাড়ি রাজাপুর এসে স্থানীয় কয়েকজনের সামনে পলাশ হত্যাকাণ্ডের তথ্য ফাঁস করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওইদিন নিহত পলাশের মা বেগম বিবি বাদী হয়ে চারজন আসামির নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে এ হত্যা মামলার আসামি রোমান ফকির গ্রেপ্তার হন। আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডে নিজের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন।
২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এ মামলার আসামি রোমান ফকিরের দেখানো স্থান থেকে পলাশের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেরখাদা উপজেলার পাতলা পুলিশ ক্যাম্পের এসআই বাবর আলী খান চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন ২২ জন আদালতে সাক্ষ্যপ্রদান করেন।
মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ