গোপনে স্কুলের ১৩ বস্তা বই বিক্রি করে দিলেন দুই সহকারী শিক্ষক

নীলফামারীর জলঢাকার কৈমারী রথের বাজার বালাপাড়া দ্বি-মুখী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুরনো সরকারি বোর্ড বই গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষক ও অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ের পুরাতন অবকাঠামো চেয়ার-টেবিলও বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে বন্ধ ছিল বিদ্যালয়টি। প্রধান শিক্ষক ছুটিতে ভারতে অবস্থান ও স্কুল বন্ধের দিনটি কাজে লাগিয়ে বিদ্যালয়ের পুরাতন বোর্ড বই ও চেয়ার-টেবিল বিক্রি করেন সহকারী শিক্ষক বিমল চন্দ্র রায়, শিক্ষক নাজমুল ইসলাম, শিক্ষক প্রতাপ চন্দ্র রায় ও অফিস সহকারী গুরুদাস চন্দ্র রায়।
এ বিষয়ে অফিস সহকারী গুরুদাশ চন্দ্র রায় বলেন, বই তো কম বেশি বিক্রি করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ছিল না। মাস্টারেরা বিক্রি করেছে।
সহকারী শিক্ষক বিমল চন্দ্র রায়ের মন্তব্যের জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
আরেক সহকারী শিক্ষক নাজমুল ইসলাম বলেন, একটা স্কুলে ১৩ বস্তা বই কীভাবে হেড মাস্টার রাখে। আগে হেড মাস্টারকে জিজ্ঞেস করেন। আর বই বিক্রির সময় স্কুলের কে দেখেছে সেটা আগে প্রমাণ করেন তারপর আমাকে বলেন আমি সহযোগিতা করবো।
বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দ্বীনবন্ধু রায় বলেন, আমার স্কুলের গোডাউনে ১৩ থেকে ১৪ বস্তা পুরোনো বই ছিল। পূর্বের হেড মাস্টার প্লাস্টিকের বস্তায় করে সংরক্ষণে রেখেছিল। আমি ইন্ডিয়া থেকে এসে শুনেছি আমার বিদ্যালয়ের সহকারী ৩ শিক্ষক ও অফিস সহকারী মিলে বই বিক্রি করেছে। আমার অবর্তমানে এমনটি হয়েছে। তবে আমি তাদের বলেছি তারা স্বীকার করেছে।
তিনি আরও বলেন, অফিস সহকারীকে আমি বলি চাবি তো তোমার কাছে থাকে, তাহলে এমনটি হলো কেন। এমন প্রশ্নে পিয়ন জানায়, স্যারেরা জোরপূর্বক চাবি নিয়ে বই বিক্রি করেছে। এ বই বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি বাবু নিরঞ্জন রায় রঞ্জু বলেন, বর্তমান কমিটির মেয়াদ না থাকা, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি ও জাতীয় দিবসটি কাজে লাগিয়ে কোনোরুপ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কিছু শিক্ষক মিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বই ও চেয়ার টেবিল বিক্রি করেছে। এটি দুঃখজনক। আমি ম্যানেজিং কমিটিতে এলে বই বিক্রির ৫ টাকার বদলে ২৫ টাকা আদায় করে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করবো।
জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, ওই বিদ্যালয়ে গোপনে বই বিক্রি হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে এমনটি হলে তা নিয়ম বহির্ভূত হয়েছে। এভাবে বই বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শরিফুল ইসলাম/এমএএস