৭ কেজি হেরোইনের সঙ্গে লাদেনের সম্পর্ক নেই, দাবি পরিবারের
তারাবির নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময়ই মসজিদের সামনে থেকে আটক করা হয় শফিকুল ইসলাম লাদেনকে। এরপর তাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে তল্লাশি চালায় র্যাব ও বিজিবি। বাড়িতে কিছু না পেলেও পাশের বাড়ির পেছনের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে সাত কেজি হেরোইন উদ্ধারের দাবি করে র্যাব। লাদেনকে ফাঁসাতেই স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে এমন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) মধ্যরাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৭ কেজি ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ আটক শফিকুল ইসলাম লাদেনের পরিবার এমন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা শহরের একটি হোটেলে পরিবারের সদস্যরা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
আটক শফিকুল ইসলাম লাদেনের ছোট ভাই মিনারুল ইসলাম বলেন, আমি ও আমার ভাই একসঙ্গে মসজিদে নামাজ আদায় করছিলাম। আমার ভাই নামাজ শেষ করে বের হওয়া মাত্রই তাকে আটক করেন র্যাবের সদস্যরা। পরে বাড়িতেও তাকে নিয়ে তল্লাশি চালিয়ে কিছুই পায়নি। পাশের বাড়ির পেছনের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে হেরোইন উদ্ধার করে আমার ভাইকে ফাঁসানো হচ্ছে। স্থানীয় কিছু মাদক ব্যবসায়ী বারবার এভাবে আমার ভাইকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে। অথচ এখন পর্যন্ত কোনো দিন তাকে কোনো প্রকার মাদকসহ আটক করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
লাদেনের বোন সাগরী বেগম বলেন, আমার ভাই একজন সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ। দিনমজুরি ও কৃষিকাজ করে সংসার পরিচালনা করেন। অথচ তাকে সাত কেজি হেরোইন দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আটকের সময় মসজিদের মুসল্লি ও স্থানীয় বাসিন্দা মিলে প্রায় দুইশ লোক জমা হয়। কিন্তু র্যাবের লোকজন কারও কথা শোনেনি। অনেকদিন আগে আমার এক ফুফাতো ভাই র্যাবের সোর্স হিসেবে কাজ করতো। সে সময় সে বেশ কিছু অনিয়ম করে। তারই সূত্র ধরে আমাদের পরিবারের ওপর এমন মিথ্যা মামলা করে ফাঁসানো হচ্ছে।
আরেক ছোট বোন নাজিরা খাতুন বলেন, আমার ভাইকে যে পরিমাণ হেরোইনসহ আটক করা হয়েছে, তার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাত কোটি টাকা। এতো টাকার মালিক অথচ খড়ের বাড়িতে বসবাস করে আমার ভাইয়ের পরিবার। আমার ভাই কোনো দিন পাবনা দেখেনি, অথচ সেখানেও তার নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা চাই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে আটক শফিকুল ইসলাম লাদেনের মেয়ে শারমিন খাতুনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-৫ এর সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে ৭ কেজি ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ শফিকুল ইসলাম লাদেনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার।
তিনি জানান, সীমান্তে ভারত থেকে আসা হেরোইন আমদানির মূলহোতা শফিকুল ইসলাম লাদেন। এর আগে র্যাব তিনবার অভিযান পরিচালনা করেও তাকে আটক করতে পারেনি। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ৫৩ বিজিবি ব্যাটলিয়নের সঙ্গে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৫ এর সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের একটি অপারেশন দল। এ সময় তার বসতবাড়ির টয়লেটের ট্যাংকের পেছনে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ৭ কেজি ১৩০ গ্রাম হেরোইন পাওয়া যায়।
জাহাঙ্গীর আলম/আরএআর
