টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে এনজিওর মালিক, কর্মীদের সংবাদ সম্মেলন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রাহকের আমানতের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার মালিক ইরানী খাতুন পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে মাঠকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলার বারোঘরিয়া বাজারের একটি হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলন করেন এনজিও কর্মী ও গ্রাহকরা।
সংবাদ সম্মেলনে এনজিও কর্মী মাসুদ রানা বলেন, আমিসহ কয়েকজন কর্মী সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার পক্ষে দুই বছর আগে থেকে কাজ শুরু করি। এনজিওর নিয়ম অনুযায়ী মূল মালিক ইরানী খাতুনের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে জামানত সংগ্রহ করে তা জমা দেই। এই নিয়মে দীর্ঘদিন ধরে এনজিওর কার্যক্রম পরিচালিত হলেও হঠাৎ করেই সব টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় মালিক ইরানী খাতুন। এরপর থেকেই আমার ওপর নানারকমভাবে চাপ বাড়িয়েছে গ্রাহকরা।
তিনি আরও বলেন, জামানতের টাকা ফেরতের দাবিতে গ্রাহকরা আমাকে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমনকি প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্তও দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে আমি ও আমার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অথচ এনজিওর এসব জামানতের টাকা নিয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন সম্পত্তি কিনেছে ইরানী খাতুন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, ইরানীকে আটক করে জনগণের জামানতের টাকা ফেরত দিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ কররার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, এনজিওকর্মী ফাতেমা খাতুন, গ্রাহক তরিকুল ইসলাম, আল-আমিন, ইমাম হাসান জুয়েলসহ অন্যান্যরা। এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ইরানীর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে জেলা শহরের শান্তিমোড়ে জামানতের টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহক ও এনজিওর কর্মীরা।
এনজিও মালিক ইরানী খাতুনের ছেলে মুঠোফোনে লুৎফর রহমান ইমু বলেন, মাসুদ রানা ও আমার মায়ের যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থা। আমার জানা মতে, জনগণের প্রায় ৪০ লাখ টাকা জামানত রয়েছে এবং ৩০ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করা আছে। কিন্তু অজানা কারণে মাসখানেক আগে থেকে আমার মা নিখোঁজ রয়েছে। মাকে সন্ধান করার পর গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে এর সমাধান করতে উদ্যোগ নেব। তবে মা হারানোর ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
জানা যায়, সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধন রয়েছে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার। এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসা. উম্মে কুলসুম জানান, আমাদের নিবন্ধন নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না। আমরা শুধুমাত্র সমাজসেবামূলক কাজের জন্য নিবন্ধন দিয়ে থাকি। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি বা এমআরএ'র নিবন্ধন ছাড়া ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।
জাহাঙ্গীর আলম/এমএএস