মাদারীপুরে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন

বিগত কয়েক দিনে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মাদারীপুরবাসীর জনজীবন। একটু শান্তির আশায় মানুষ গাছের নিচে কিংবা ছায়া ও শীতল কোনো স্থানে ছুটছে। সূর্যের খরতাপে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এখানকার খেটে খাওয়া মানুষদের। এছাড়া তীব্র গরমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য সিয়াম সাধনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, আপাতত দুই-তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই।
রোববার (১৬ এপ্রিল) মাদারীপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এদিকে গরমে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে কর্মজীবী মানুষজন। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। জীবিকা নির্বাহের তাগিদে দিনমজুর, পরিবহন শ্রমিক, কৃষকরা গরম উপেক্ষা করেই বাইরে বের হচ্ছেন। অনেকে রোজা রেখেই করছেন এসব কাজ। এদিকে রোদ ও তীব্র গরমের কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতিও অনেকটা কমে গেছে।
ভ্রাম্যমাণ কাপড় বিক্রেতা মোতালেব ঢাকা পোস্টকে বলেন, গরমের কারণে রাস্তাঘাটে বের হয়ে ব্যবসা করা বড় কঠিন হয়ে পড়েছে। রাস্তায় দাঁড়ালেই আবার ছায়া খুঁজতে হয়। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
রিকশাচালক কালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এই গরমে রিকশা নিয়ে বের হইলে মাথা ঘুরায়। বেশিক্ষণ চালাইতে পারি না। না চালিয়ে তো কোনো উপায় নেই। পোলাপান আছে। তাদের খাবার, কিস্তির টাকা, বাসা ভাড়া জোগাড় করতে হয়।’

দিনমজুর আবুল কালাম বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে কাজ হাতে উঠছে না। সকালে কাজে বের হয়েছি কিন্তু দুপুরের কড়া রোদ আর সহ্য হচ্ছে না। তাই কাজের ফাঁকে গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছি।’
রিপন নামে এক ফল বিক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘গোগলপাতিয়া গ্রাম থেকে মাদারীপুর শহরে ফল বিক্রি করতে এসেছি। সূর্য উঠার পর থেকে রোদের তাপ অনেক বেড়ে যায়। রোদের তাপে দোকানের সামনে ফল বিক্রি করা যায় না।’
এদিকে দাবদাহ বেড়ে যাওয়ায় শহরে বেড়েছে কোমলপানীয়ের চাহিদা। ফুটপাতে বিক্রি করা লেবুর শরবত, ফলমূল খাচ্ছেন অনেকে। একইসঙ্গে চাহিদা বেড়েছে তরমুজ ও ডাবের।
ব্যবসায়ী দুলাল মুন্সী বলেন, ‘আমি সারা দিন হেঁটে এগুলো বিক্রি করি। এখন এত গরম হাঁটতেও পারি না। বিক্রি করতে না পারলে সংসার চালানো বড় কঠিন হয়ে যায়। আমি আজকে সারা দিনে মাত্র ১০০ টাকা বিক্রি করছি। যেখানে আমি প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় শ টাকা বিক্রি করি। আমি কীভাবে সংসার চালাব বুঝতে পারছি না।’

কনফেকশনারি দোকানদাররা জানান, তীব্র গরমে কোমলপানীয়, জুস ও আইসক্রিম বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। এছাড়া শহরের ইলেক্ট্রনিক্স দোকানগুলোতে পাখা বিক্রির ধুম লেগেছে।
মাদারীপুরের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আব্দুর রহমান সান্টু বলেন, মাদারীপুরে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠানামা করছে। তবে শিগগিরই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলেই গরম কমে যাবে।
রাকিব হাসান/এমজেইউ