চার্টের বাইরে অতিরিক্ত বাস ভাড়া নিলেই ব্যবস্থা নেবে পুলিশ

ঈদুল ফিতরে ঘরে ফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ। সড়ক-মহাসড়কের প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সড়কের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হাজারেরও বেশি পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। যারা যানজট নিয়ন্ত্রণ ঈদের দিন পর্যন্ত সড়কে থাকবেন।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাতে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর চন্দ্রা ও আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়ক ঘুরে দেখা যায়, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে বাস ভাড়ার চার্ট। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে নিতে বলা হয়েছে পুলিশি সহায়তা।
রাতে নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল ত্রিমোড়ের ফুট ওভার ব্রিজে এমন একটি বাস ভাড়ার চার্ট দেখা যায়। যেখানে উত্তরবঙ্গগামী বাস ভাড়ার তালিকা দেওয়া হয়েছে। যাতে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা-সিরাগঞ্জ ৩৭২ টাকা, ঢাকা-বগুড়া ৫৫৮ টাকা, ঢাকা-নাটোর ৫৯৩ টাকা, ঢাকা-পাবনা ৬৪৬ টাকা, ঢাকা-নওগাঁ ৭০১ টাকা, ঢাকা-রাজশাহী ৭১২ টাকা, ঢাকা-জয়পুর হাট ৭১২ টাকা, ঢাকা-রংপুর ৮৭৯ টাকা, ঢাকা-দিনাজপুর ৯৪০ টাকা, ঢাকা-লালমনিরহাট ৯৯৪ টাকা, ঢাকা-কুড়িগ্রাম ১০০২ টাকা, ঢাকা-নীলফামারি ১০১৬ টাকা, ঢাকা-ঠাকুরগাঁও ১০৯৫ টাকা ও ঢাকা-পঞ্চগড় ১২৩৫ টাকা। চার্টটি ঢাকা জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ উত্তরের পক্ষ থেকে টানিয়ে দেওয়া হয়। চার্টের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান করা হয়েছে।
বাইপাইলের কামরুল নামে এক যাত্রী বলেন, মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঢাকা জেলা পুলিশ চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছেন। যেভাবে বাস ভাড়ার চার্ট টানানো হয়েছে এভাবে ভাড়া আদায় করলে উপকৃত হবে সাধারণ মানুষ। এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এখন চার্টের ভাড়ার বিষয়টি বাস্তবায়ন হলেই আমরা খুশি।
সরকার মাহমুদ সবুজ নামের এক ব্যক্তি গাইবান্ধার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ দেখছি। তারা অত্যন্ত তৎপর রয়েছেন। এমন থাকলে এবার যানজটের সৃষ্টি হবে না। মানুষ নির্বিঘ্নে ঘরে ফিরতে পারবে। এজন্য পুলিশের পাশাপাশি ঘরে ফেরা মানুষদেরও সচেতন হতে হবে। আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করলেই সড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে বলে আমি মনে করি।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জান পিপিএম বলেন, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে যারা বাড়ি ফিরছেন তাদের যাত্রা যেন সুন্দর হয়, নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদে ফিরতে পারেন তা নিশ্চিতে আমরা তৎপর রয়েছি। আমরা বাইপাইল, সাভার, নবীনগর ও আমিনবাজারসহ প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি।
চালকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, নির্দিষ্ট স্থানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে হবে। যাত্রীরাও যেন নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে গাড়িতে ওঠেন। যাত্রীরা যদি সড়কের মধ্যে আসেন আর গাড়ি যদি সড়কের মাঝে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে যানজটের সৃষ্টি হবে। আমরা চেষ্টা করছি শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক ভাইদের যাত্রা যেন সুন্দর এবং সুশৃঙ্খল হয়। এজন্য তাদের আইন মানতে হবে। যাত্রীদের যেমন আইন মানতে হবে তেমনি বাস চালক ও মালিক সমিতিকেও ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে নামানো থেকে বিরত থাকতে হবে। একই সঙ্গে ভালো চালক দিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। এগুলো নিশ্চিত করলেই আশা করি আমরা সুন্দর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উপহার দিতে পারব।
মাহিদুল মাহিদ/আরকে