বাস থাকলেও যাত্রীর চাপ নেই চন্দ্রায়

গাজীপুরের শিল্পকারখানাগুলোতে কর্মরত অনেকেই স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তবে এখনও অধিকাংশ শিল্পকারখানা ছুটি না হওয়ায় ঈদযাত্রায় উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রায় কাঙ্ক্ষিত যাত্রী পাচ্ছে না যানবাহনগুলো। এতে অনেক বাস নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যেতে পারছে না বলে জানা গেছে।
একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। বুধবার (১৯ এপ্রিল) ভোরের আলো ফুটার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদের কিছুটা ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে এখনও গাজীপুর জেলার অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা না করায় পুরোপুরি ঈদযাত্রা শুরু হয়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে আশা করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
উত্তরবঙ্গগামী আলিফ পরিবহনের চালক মামুন মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, বুধবার ভোরে বগুড়ার উদ্দেশ্যে যেতে বাস নিয়ে চন্দ্রা আসেন। কিন্তু যাত্রী সংকটে সকাল ১০টায়ও তিনি ছেড়ে যেতে পারেননি। পুরো বাসে যাত্রী না হলে তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানান। তাই পুরো বাসে যাত্রীর জন্য তার অপেক্ষা করতে হবে।
বুধবার সকালে টাঙ্গাইল থেকে বাস নিয়ে আসেন আব্দুল্লাহ পরিবহনের চালক মাহফুজ মিয়া। তিনি জানান, ভালো যাত্রী পাওয়ার আশায় বুধবার সকালে টাঙ্গাইল থেকে স্বল্প ভাড়ায় বাস নিয়ে চন্দ্রায় আসেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পাওয়ায় তাকে নিরাশ হতে হয়েছে। তার আশা বিকেল থেকে বাড়বে মহাসড়কে যাত্রীর চাপ।
এদিকে পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। বগুড়ার শেরপুরগামী যাত্রী তারেক হাসান বাচ্চু অভিযোগ করেন, স্বাভাবিক সময়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বাড়িতে যান। কিন্তু এখন ভাড়া চাওয়ার কোনো হিসেব নেই। যে যার মতো ভাড়া আদায় করছেন। কেউ প্রতিবাদ করলেও তেমন কাজ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তি দূর করে ঘরে ফেরা নিশ্চিত ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন জেলা ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা।
নাওজোর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গাজীপুর জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ মানুষের ঈদযাত্রা সহজ করতে যৌথভাবে কাজ করছে। বুধবার সকাল থেকে তেমন চাপ নেই। যারাই ঈদে বাড়ি ফিরতে রওনা হয়েছেন তারা স্বস্তিতে যাতায়াত করছেন। মহাসড়কে কোনো ধরনের যানজট নেই। কোথাও এক মিনিটের জন্যও দাঁড়াতে হচ্ছে না। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া হঠাৎ মহাসড়কে বিকল হয়ে পড়া গাড়ি সরিয়ে নিতে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সড়কে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বিবেচনায় পুলিশের মোবাইল টিমও কাজ করছে বলে তিনি জানান।
গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) নাজমুস সাকিব খান বলেন, গাজীপুর জেলার ট্র্যাফিক বিভাগকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি হলো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা-কালিয়াকৈর এরিয়া, আরেকটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর থানা ও শ্রীপুর থানা এরিয়া, অন্যটি কালিগঞ্জ-কাপাসিয়া থানা এরিয়া। চন্দ্রা এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক ও ঈদযাত্রায় ভোগান্তি দূর করতে দুই শিফটে ২৪০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া যেসব পয়েন্টে যানজট সৃষ্টি হয় সেসব পয়েন্টগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া চালক-যাত্রীদের সচেতন করতে মাইকিং করছি, তাদের বুঝানোর চেষ্টা করছি তারা যেন যানজটের কারণ না হন।
তিনি আরও বলেন, চন্দ্রাসহ মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সচেতনতামূলক বিভিন্ন ব্যানার লাগানো হয়েছে। ওই ব্যানারে ট্র্যাফিক নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমরা ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মলম পার্টি ও ছিনতাইকারীদের তৎপরতা রোধেও কাজ করছি।
শিহাব খান/এমজেইউ