এতিম শিশুদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিলেন তারা

কেউ হারিয়েছেন বাবা, কেউবা মা, আবার কেউ বাবা-মা দুইজনকেই হারিয়েছেন। নোয়াখালীর ৯টি উপজেলার এমন ৩২৮ জন এতিম শিশুর ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘শিখা সংসদ’।
৬ দিন ধরে চলা এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শেষ হয় সোমবার (২৪ এপ্রিল) রাত ১২টায়। এর আগে ১৯ এপ্রিল (বুধবার) খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসির আরাফাত।
জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার এতিমদের তালিকা করে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকরা। এসব খাদ্য সহায়তার মধ্যে ছিল চাল ১০ কেজি, আলু ৫ কেজি, পেয়াজ ৩ কেজি, তেল ১ কেজি, ডাল ১ কেজিসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী। সমাজের বিত্তবানদের কাছ থেকে পাওয়া সহায়তার টাকা দিয়ে দের হাতে এসব খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এতে খরচ হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৫৮০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেগমগঞ্জ উপজেলার এক উপকারভোগী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর কাউকে পাশে পাইনি। সবাই কেবল আশ্বাসই দিয়েছেন। আমার মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে আমাদের মুখে আহার তুলে দেন। তাদের এমন সহায়তা আমাদের উপকারে আসবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আরেক উপকারভোগী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবা-মা হারানোর পর থেকে বোনের বাড়িতে থাকি। এখানে থেকে আমি পড়াশোনা করছি। আমাকে যারা সাহায্য দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
তোফায়েল আহমেদ নামের এক বৃদ্ধ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকে নাতি এবং ছেলের বউ আমার কাছে থাকে। শিখা সংসদ বিভিন্ন সময় আমাকে সহযোগিতা করেছে। এবার খাদ্য সামগ্রী দিয়েছে। তাদের জন্য মন থেকে দোয়া করি।
স্বেচ্চাসেবী সংগঠন শিখা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সবুজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এই সমাজে এতিম শিশুদের পরিবারগুলো অবহেলিত। তাই আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বিত্তবানদের সহায়তায় এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসির আরাফাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রকৃত অসহায় যারা তাদের বেশি সহায়তা প্রয়োজন। এতিমদের মাঝে এমন কার্যক্রম প্রশংসার দাবি রাখে। বিত্তবানদের উচিত সব সময় অসহায়দের খবর রাখা এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করা। এ সহায়তা আমাদের সুন্দর সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
হাসিব আল আমিন/এবিএস