ব্যবসায়ীর মরদেহ গুম, ২৬ বছর পর আসামি গ্রেপ্তার

নোয়াখালীর বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনীর ব্যবসায়ী ও হক লাইব্রেরির মালিক ফজুলল হককে অপহরণের পর মরদেহ গুমের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি জামাল উদ্দিনকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছেন র্যাব-১১ এর সদস্যরা। জামাল গ্রেপ্তার এড়াতে ২৬ বছর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানায় র্যাব।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত জামালকে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। এর আগে সোমবার (২৪ এপ্রিল) রাত দেড়টার দিকে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর মোহাম্মপুরের আকনগলি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত জামাল উদ্দিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের শরিফপুর ইউনিয়নের মৃত ছাদু মিয়ার ছেলে।
র্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জামাল উদ্দিন ও আবুল হাসেমসহ কয়েকজন মিলে চৌমুহনী রেলস্টেশন রোডের হক লাইব্রেরির মালিক মুক্তিযোদ্ধা সামছুল হকের বড় ছেলে ফজুলল হককে মাইক্রোবাসযোগে অপহরণ করে। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পায়নি। পরে একই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ফজলুল হকের বাবা সামছুল হক বাদী হয়ে সহোদর আবুল হাসেম ও জামাল উদ্দিনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা করেন।
র্যাব আরও জানায়, মামলার তদন্ত শেষে ডিবি পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে জানায়, হত্যাকারীররা মরদেহ গুম করেছে। ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সহোদর আবুল হাসেম ও জামাল উদ্দিনকে বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক শিরিন কবিতা আক্তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
নিহতের ছোট ভাই জিয়াউল হক বলেন, রায় ঘোষণার সময় আবুল হাসেম উপস্থিত থাকলেও জামাল উদ্দিন ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল।
র্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আসামি জামাল উদ্দিন নাম-পরিচয় গোপন করে আত্মগোপনে চলে যান। র্যাবের সদস্যরা তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এবং ছায়া তদন্তের মাধ্যমে আসামির পরিচয় শনাক্ত করেন। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামি জামাল উদ্দিনকে ২৬ বছর পর গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিকে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাসিব আল আমিন/আরএআর