খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়েছে ৩০ বছরের পুরোনো রাস্তায়

সিমেন্টের তৈরি বড় বড় খুঁটি পুঁতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩০ বছরের পুরোনো সরকারি হালটের একটি রাস্তা। শুধু তা-ই নয়, রাস্তাটি কেটে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে রাস্তার পাশে থাকা দখলকারীর পুকুরের সঙ্গে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাস্তাটি দিয়ে চলাচলকারী স্থানীয় বেশ কয়েকটি গ্রামের সাধারণ মানুষ।
এদিকে রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় বাধ্য হয়েই এলাকার লোকজনকে বিকল্প রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
এ ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের বৃ-চিকনী গ্রামে।
বিষয়টি নিয়ে বৃ-চিকনী গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ জাকারিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকেই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছি। প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি পুরোনো এ রাস্তাটি। আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ চলাচল করে আসছে এ রাস্তা দিয়েই।
কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ রাস্তার মাঝখানে সিমেন্টের বড় বড় খুঁটি পুঁতে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয় বৃ-চিকনী গ্রামের মৃত আবুল হাশেমের ছেলে মোহাম্মদ শামীম। তিনি রাস্তা বন্ধ করার পর এখন রাস্তা কেটে তার পুকুরের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলছেন। এ ঘটনায় সম্প্রতি মোহাম্মদ জাকারিয়া বৃ-চিকনী গ্রামবাসীর পক্ষে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

বৃ-চিকনী গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি সাহাবুদ্দিন জানান, রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা চরম বিপাকে আছি। অনেক পুরোনো সরকারি এ রাস্তাটি কেটে পুকুর বানানো হচ্ছে। শামীম গ্রামবাসীর নিষেধ শোনেনি। নিজের জায়গা দাবি করে শামীম হঠাৎ সড়কটি বন্ধ করে দিয়ে দখলে নিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ শামীমের সঙ্গে কথা হলে রাস্তাটি দিয়ে এলাকার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করে আসছেন স্বীকার করে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ রাস্তাটিতে ১৩ ফুট সরকারি হালট রয়েছে। আমি যে জায়গা দখল নিয়েছি, সেই জায়গাটা সরকারি হালটের বাইরে। আমার জায়গাই আমি দখল নিয়েছি।
স্থানীয় গড়াডোবা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বাবলু ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। চলমান একটি রাস্তা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়াটা খুবই দুঃখজনক। তবে ভালো করে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করব।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মইনউদ্দিন খন্দকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তায় পুঁতে রাখা খুঁটিগুলো সরাতে বলা হয়েছে এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে সরকারি হালট নির্ধারণ করে হবে। সরকারি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া বা দখল করে নেওয়ার অধিকার কারও নেই বলেও ইউএনও জানান।
মো. জিয়াউর রহমান/এনএ