বরগুনায় পুকুরে এক কেজি ওজনের ইলিশ

বরগুনার তালতলীর একটি পুকুরে এক কেজির বেশি ওজনের একটি ইলিশ পাওয়া গেছে। পুকুর সেচের পর সোমবার (২২ মার্চ) দুপুরে তালতলী উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের কাউসার হাওলাদারের পুকুরে ইলিশটি পাওয়া যায়। পুকুরে এত বড় ইলিশ পাওয়ার ঘটনায় ইলিশ চাষ এবং গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে জানিয়েছে চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র।
কাউসার আহমেদ বলেন, সোমবার দুপুরে আমাদের পুকুরের সেচ সম্পন্ন হয়। মাছ ধরার সময় অন্যান্য মাছের সঙ্গে এক ফুটের বেশি দৈর্ঘ্যের এক কেজির বেশি ওজনের একটি ইলিশ পাই।
তিনি বলেন, পুকুর থেকে তিন কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে পায়রা নদীর অবস্থান। নদীর সঙ্গে সংযুক্ত একটি খাল আছে। যার দূরত্ব পুকুর থেকে আড়াইশ ফুটের বেশি। ঝড় কিংবা বৃষ্টিতে পুকুর কখনো প্লাবিত হয় না। জোয়ার-ভাটার পানি তো দূরের কথা অন্য কোথাও থেকে পুকুরে পানি আসে না। তাই পুকুরে এত বড় ইলিশ পাওয়ার ঘটনায় আমরা বিস্মিত।
কাউসার আহমেদের ভাগনেবউ রোজী আক্তার বলেন, পুকুরে পাওয়া ইলিশটি নদীর ইলিশের মতো। দুপুরে রান্নার সময় নদীর ইলিশের মতো ঘ্রাণ ছড়িয়েছে। খেয়ে নদীর ইলিশের মতো স্বাদ পেয়েছি।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, তালতলীর একটি পুকুরে বড় ইলিশ পাওয়ার তথ্য আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। তাই পুকুরটি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পুকুরের পানি এবং মাটি সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে।
নদী কেন্দ্র চাঁদপুর কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক আনিছুর রহমান বলেন, ইলিশ চাষের জন্য আমরা চাঁদপুরে তিনবার এবং পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একবার পরীক্ষামূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাইনি। তাই এ ধরনের কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর পেয়েছি। এসব ইলিশের আকার এবং আকৃতি তেমন বড় ছিল না।
‘পুকুরে ইলিশ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকলেও সাধারণত আধা কেজির বেশি হয় না। কিন্তু তালতলীতে পুকুরে পাওয়া ইংলিশটি যেহেতু এক কেজির বেশি, তাই নতুন করে আমাদের গবেষণা শুরু করতে হবে। তালতলীর যে পুকুরে ইলিশ পাওয়া গেছে সে পুকুরের পানি এবং মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
তিনি বলেন, সবার অজান্তে পুকুরে ইলিশ যদি এত বড় হতে পারে; তাহলে যথাযথ ব্যবস্থাপনায় পুকুরে ইলিশ চাষ নিশ্চয়ই সম্ভব। যেহেতু পুকুরে পাওয়া ইলিশের মধ্যে নদীর ইলিশের সব গুণাবলী বিদ্যমান, তাই ইলিশ গবেষণা এবং চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
এর আগে ১৯ মার্চ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসেম মহাজনের পুকুরে আটটি ইলিশ মাছ ধরা পড়ে।
চেয়ারম্যান বলেন, জেলেরা পানি সেচে মাছ ধরার সময় অন্য মাছের সঙ্গে বড় আটটি ইলিশ পেয়েছেন। প্রতিটির ওজন প্রায় এক কেজি।
সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এএম