রাজশাহী থেকে প্রিয়জনদের মরদেহ নিয়ে বাড়ির পথে স্বজনরা

রাজশাহীর কাটাখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার (২৭ মার্চ) বেলা সাড়ে তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে নগরীর কাটাখালী থানা পুলিশ। এর আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাটাখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মতিয়ার রহমান।
তিনি জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে মাইক্রোবাসের ভেতর মারা যাওয়া ১১ জনের মরদেহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। শনাক্ত করার জন্য তাদের স্বজনদের ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১৬ জনের মরদেহ চিহ্নিত করা হয়। বাকি ছিল মাইক্রোবাসের চালক হানিফের মরদেহ। বিকেলে তার স্বজনরা এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রত্যেক মরদেহের নমুনা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশ পরিদর্শক বলেন, শনাক্তকরণ নম্বর দিয়ে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয় স্বজনদের কাছে। এই নম্বর ঠিক রেখে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাতে ডিএনএ পরীক্ষার ফল এলে কোন মরদেহটি কার ছিল, তা জানা যায়।

দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন- রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়রাজা রামপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন (৩৬), তার স্ত্রী সামছুন্নাহার (২৮), ছেলে সাজিদ (৭), মেয়ে সাফা (৪), সামছুন্নাহারের বড় বোন কামরুন্নাহার (৪১), বড়মজিদপুর গ্রামের পার্টস ব্যবসায়ী ফুল মিয়া (৪০), তার স্ত্রী নাজমা (৩৫), মেয়ে সাবিয়া (৪), মেয়ে সুমাইয়া (৮), ছেলে ফয়সাল (১৩), রায়পুরের ডারিকাপাড়া গ্রামের মোখলেছার (৪৫), তার স্ত্রী পারভীন (৩৫), থানাপাড়া এলাকার মাইক্রোবাসচালক হানিফ উদ্দিন (২৮), প্রজাপাড়ার তাজুল করিম (৪৫), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (৩৫), ছেলে ইয়াসিন (১৪), দুরামিঠিপুর দক্ষিণপাড়ার শহিদুল মিয়া (৪৫)।
দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেছেন মাইক্রোবাসের আরোহী পাভেল (১৯)। তার বাবা মোখলেছার রহমান ও মা পারভীন বেগম দুর্ঘটনায় নিহত হন। পাভেল আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন।
গতকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ) বেলা পৌনে দুইটার দিকে কাটাখালী থানার সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটিতে আগুন লেগে যায়। দুর্ঘটনার পর আটজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাদের মধ্যে ছয়জন মারা যান। পরে আগুনে পোড়া মাইক্রোবাস থেকে নারী ও শিশুসহ ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় রাতে নগরীর কাটাখালী থানায় হানিফ পরিবহনের চালক আবদুর রহিমকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। শনিবার দুপুরের দিকে নগরীর বেলপুকুর থানার মাহিন্দ্র বাইপাস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এনএ