পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা, বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা

তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জিকেএস হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীরসহ তার পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাতে বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম।
এর আগে গতকাল সোমবার (১২ জুন) রাতে তাড়াশ থানায় মামলাটি দায়ের করেন তাড়াশ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) নিরাপদ দাস।
মামলার আসামিরা হলেন, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জিকেএস এনজিও এবং হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর, তার ছেলে শাফি জাহাঙ্গীর, সেলিম জাহাঙ্গীরের ছোটভাই খন্দকার সাইফুল ইসলাম, তার ছেলে সাব্বির খন্দকার ও শিশির খন্দকার।
মামলার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, তাড়াশ জোনাল অফিসের জুন/২০২৩ ক্লোজিং মাসের সরকারি রাজস্ব আদায়ের লক্ষে গত ১২ জুন তাড়াশ জোনাল অফিসের আওতাধীন তাড়াশ পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের আশপাশের এলাকায় এজিএম রাব্বুল হাসানের নেতৃত্বে বকেয়া বিল উত্তোলনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কার্যক্রম পরিচালনার এক পর্যায়ে জিকেএস হাসপাতালে তিন মাসের সর্বমোট ৪৪ হাজার ২৫৭ টাকা আদায়ের জন্য গেলে জিকেএস হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর বিল পরিশোধের জন্য ২ ঘণ্টা সময় নেন।
পরবর্তীতে দুই ঘণ্টা পর বকেয়া বিল চাইতে গেলে জিকেএস হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর বিল দিতে অস্বীকৃতি জানান। বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়ে খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর ও তার ছেলে শাফি জাহাঙ্গীর বকেয়া বিলের তালিকাসহ অন্যান্য কাগজ কেড়ে নেন। পরবর্তীতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্যোগ নিলে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা টেকনিশিয়ান নাজেদ আলী, লাইন শ্রমিক মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ফোল্ডিং হটিষ্টিক ছিনিয়ে নেন এবং গালিগালাজ করেন।
এসময় সেলিম জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই খন্দকার সাইফুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে সবাই মিলে একত্রিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বকেয়া বিল উত্তোলন কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় এজিএম রাব্বুল হাসান, মিটার রিডার মোস্তফা কামাল, টেকনিশিয়ান নাজেদ আলী গুরুতর আহত হয়। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলা চলাকালে এজিএম রাব্বুল হাসানের হাতে থাকা ৮৩ জন গ্রাহকের জমাকৃত বকেয়া বিলের ২ লাখ টাকা, ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক লাইন কাজে ব্যবহৃত মালামাল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জিকেএস হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, আমার বিল পরিশোধ আছে। তারপরও আমার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আসে। আমি বাধা দিলে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। তারপর শুনলাম আমার বিরুদ্ধে, আমার ছেলে, ভাই ও ভাইয়ের ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। এর বাইরে কিছু বলতে পারবো না।
এ ব্যাপারে তাড়াশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. শহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তবে মামলার পরেই আসামিরা সবাই পালিয়েছে।
শুভ কুমার ঘোষ/এমএএস