ফরিদপুরে ৫ ঘণ্টায় কুকুরের কামড়ে ৩২ জন হাসপাতালে

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পাঁচ ঘণ্টায় কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে ৩২ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী ৩২ জন চিকিৎসা নেন।
চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে ভাঙ্গা পৌরসভার সাতটি মহল্লা এবং আলগী, হামিরদী, ঘারুয়া ও কাউলিবেড়া ইউনিয়নের আটটি গ্রামের বাসিন্দারা রয়েছেন। পাশাপাশি একই দিনে বিড়ালের কামড়ে আহত দুই জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহতরা হলেন- ভাঙ্গা সরকারি কাজী মাহবুবউল্লাহ কলেজের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক ঝর্না রানী মৃধা (৫৮), ভাঙ্গা পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীকান্দা সদরদী মহল্লার টুটুল শেখ (৪৬), আলম (২০), আলেয়া বেগম (৬০), পাখি আক্তার (৬০), আকলিমা (৪০), নাজমা (৭), মতিয়ার শেখ (৩৭), একই ওয়ার্ডের রায়পাড়া সদরদী মহল্লার সিফাত (২০), রিজিয়া বেগম (৬০), তিন নম্বর ওয়ার্ডের চন্ডীদাসদি মহল্লার আবির (১২), জামাল মিয়া (৪৭), জমেলা বেগম (৬৫), আলো রানী (৩৫), কলেজ পাড়ের রাকিব মাতুব্বর (৫৫), আট নম্বর ওয়ার্ডের হোগলাডাঙ্গী মহল্লার আশরাফ (৫৫), জাহানারা বেগম (৩৫), চার নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব হাসামদিয়া মহল্লার আসমা (৬০), মধ্যপাড়া হাসামদিয়া মহল্লার মিজানুর মোল্লা (৪৭), নয় নম্বর ওয়ার্ডের কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার মনি (২৭), ভাঙ্গার আলগী ইউনিয়নের সোনাখোলা গ্রামের রাজু (২০), সোহেল (২৩), কাচিখালী গ্রামের হাবিবুর রহমান (২৪), ছোট খারদিয়া গ্রামের সাদিয়া (৪), পিরের চর গ্রামের জান্নাতি (১২), চরকান্দা গ্রামের সেলিম মোল্লা (৩৫), হামিরদী ইউনিয়নের ছোট হামিরদী গ্রামের খোকন মিয়া (৪৮), কাউলিবেড়া ইউনিয়নের কাউলিবেড়া গ্রামের সানুজ্জামান (৩২), ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুড়া গ্রামের শেখ খোকন (৪৫), ও ভাঙ্গায় বেড়াতে এসে বিভিন্ন জেলার তিনজন কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
একই দিনে বিড়ালের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ভাঙ্গার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামের জাবের (১২) ও শাওন (৩৪)।
কুকুরের কামড়ের বর্ণনা দিয়ে ভাঙ্গা সরকারি কাজী মাহবুবউল্লাহ কলেজের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক ঝর্না রানী মৃধা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কলেজ থেকে হেঁটে কাফুরিয়া সদরদী মহল্লায় অবস্থিত ভাড়া বাসায় যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বিদ্যুৎ গতিতে একটি কুকুর এসে আমার বাম পায়ে কামড় দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এর ফলে আমার পায়ের মাংস ছিঁড়ে গেছে।
ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুড়া গ্রামের শেখ খোকন জানান, তিনি ভাঙ্গা পৌরসভায় কাজ শেষে করে বাড়ি ফেরার পথে কুকুরের কামড়ের শিকার হন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. প্রাণেশ চন্দ্র পন্ডিত বলেন, সম্প্রতি এক দিনে কুকুরের কামড়ের শিকার হয়ে এত ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে আসেননি। দফায় দফায় কুকুরের কামড়ের রোগী দেখে প্রথম পর্যায়ে হতবাক হয়ে পড়ি। সকলকেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। তবে কাউকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়নি। আহতদের প্রথম ডোজের তিন দিন পর দ্বিতীয় ডোজ, সাতদিন পর তৃতীয় ডোজ ইনজেকশন নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিমউদ্দিন বলেন, বিষয়টি আতঙ্কের। বর্তমানে কুকুর মারার ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। একাধিক পাগলা কুকুর এসব মানুষকে কামড় দিয়েছে।
জহির হোসেন/আরএআর