ভাতার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন যুবক

শিশু শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও পুষ্টিভাতা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শতাধিক নারীর কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে এক যুবক। ঘটনাটি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী থানার ফুলবাড়ী ইউনিয়নে ঘটেছে।
প্রতারণার শিকার নারীরা মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালের দিকে ফুলবাড়ী থানা ও ফুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর হাফিজুর রহমানের (৪০) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের বালাতারি গ্রামের বাসিন্দা এনছার আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান (৪০)। তিনি গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একই এলাকার শতাধিক নারীকে তাদের শিশু শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও পুষ্টি ভাতা করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসছেন। তার এমন প্রলোভনে নারীরা সাড়া দিলে তিনি প্রথমে ব্যাংকে হিসাব খোলার কথা বলে খরচ বাবদ প্রত্যেকের কাছে ১ হাজার করে টাকা আদায় করেন। পরবর্তীতে নানান অজুহাতে একই নারীদের থেকে আরও ২-৪ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেওয়ার সময় হাফিজুর বলেন ২ মাসের মধ্যে আপনারা উপবৃত্তি ও পুষ্টি ভাতার টাকা পাবেন। কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও ভাতার সুবিধা না পাওয়ার ভুক্তভোগীরা হাফিজুরের বাড়িতে ভাতার জন্য ধরনা দিতে শুরু করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তার বাড়িতে ধরনা দিয়ে কোন লাভ না হওয়ায় তারা বুঝতে পারেন হাফিজুর টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করছেন।
প্রতারণার শিকার নারীরা একজোট হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে নিজেদের টাকা ফেরত না পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন তারা।
প্রতারণার শিকার সোহাগী নামে এক নারী বলেন, আমার মেয়ের পুষ্টি ভাতা করে দেওয়ার কথা বলে হাফিজুর আমার কাছ থেকে তিন দফায় ৩ হাজার টাকা নিয়ে এখন লাপাত্তা। তাকে টাকা দেওয়ায় আমার পরিবারে অশান্তি শুরু হয়েছে। আমি এই প্রতারকের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
আনোয়ারা নামে আরও এক নারী বলেন, হাফিজুরের কথায় বিশ্বাস করে আমি এলাকার ৬০ জনের কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা আদায় করে তার হাতে তুলে দিয়েছি। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি ভাতা না পেয়ে তারা এখন আমার কাছে সেই টাকা ফেরত চাচ্ছে। আমি কোথা থেকে টাকা ফেরত দেবো? সরল মনে হাফিজুর কে বিশ্বাস করে আমি এখন শান্তিতে থাকতে পারছি না। আমি হাফিজুরের বিচার চাই।
অভিযোগ প্রাপ্তি ও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ হারুন বলেন, এর আগেও তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠায় আমি নিজে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি হাফিজুরের প্রতারণার বিষয়টি। এবারের ঘটনায় প্রতারণার শিকার নারীরা ফুলবাড়ী থানায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আশা করি তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
ফুলবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, এখনো অভিযোগ হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মো. জুয়েল রানা/এএএ