জামিনে মুক্তি মিললেই গাছের চারা উপহার দিচ্ছে পুলিশ

চলতি বছরের পুরো জুলাই মাসব্যাপী কারাগার থেকে প্রতিদিন জামিনে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিদের মাঝে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ গাছের চারা বিতরণ করেছে।
মাদক চোরাচালানসহ ছোটখাটো বিভিন্ন অপরাধে কারাবন্দীরা জামিনে মুক্ত হলেই কারা ফটকে তাদের হাতে পুলিশ সদস্যরা তুলে দিচ্ছেন একটি করে গাছের চারা।
কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মাহফুজুল ইসলামের এই উদ্যোগে সামাজিক এ কাজ করে যাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ সুপার জানান, অপরাধীরা যাতে মাদক ছেড়ে, অপরাধ ছেড়ে ইতিবাচক ও উন্নয়নমুখী জীবনের দিকে এগিয়ে যায় সেজন্যই আমরা তাদের সহায়তা করছি। প্রকৃতির স্পর্শে মানুষ কম অপরাধ প্রবণ হয়। গাছ ও প্রকৃতি মানুষকে নিউরো-ব্যালেন্সড বিইং হিসাবে রুপান্তর করে, সেজন্য মানুষ কম অপরাধ করে।
কারা ফটকে জামিনে মুক্তদের হাতে গাছের চারার সঙ্গে ইতিবাচক জীবনে ফেরার নোট দিয়ে প্রতিটি চারার সঙ্গে একটি শুভেচ্ছা কার্ডও দেওয়া হয়।
১৮ জুলাই সোমবার কুড়িগ্রাম কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হোন ১৪ জন। তাদের প্রত্যেককেই দেওয়া হয় বনজ বা ফলজ গাছের চারা। জুলাই মাস জুড়ে প্রতিদিন কুড়িগ্রাম কারাগার থেকে জামিনে মুক্তদের দেওয়া হবে এইসব গাছের চারা।
এদিন চারাগাছ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার আল আসাদ মাহফুজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ.কে.এম ওহিদুন্নবী, জেলার আবু ছায়েম।
জামিনে মুক্ত জনাব মোয়াজ্জেম বলেন, এরকম তো কোনদিন শুনিনি। জেল থাকি ব্যারাইলে মানুষ গাছ দেয়। খুব ভালো নাগিল।
জব্বার নামে আরেকজন বলেন, আর কোনদিন মাদকের সঙ্গে যুক্ত হব না। গাছ লাগাব, সুন্দর জীবন-যাপন করব। বৃক্ষের ন্যায় শুরু হোক নতুন জীবন -এই বোধোদয় ও ধারণা নিয়ে জামিনে মুক্তরা বাড়ি ফিরতে পারেন সেই আশা ব্যক্ত করেন পুলিশ সুপার।
ইতিবাচক উন্নয়নমুখী জীবনের জন্য জুলাই মাস জুড়ে প্রতিদিন জামিনে মুক্তদের মাঝে চারা বিতরণের জেলা পুলিশের এই কার্যক্রমে সার্বিক সহায়তা করছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রসাশন ও জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের 'সবুজ করি কুড়িগ্রাম' মাসব্যাপী কার্যক্রমের প্রথম পর্যায়ে ১০ সহস্রাধিক গাছের চারা বিতরণ ও বৃক্ষরোপন অভিযানের অংশ হিসাবে এই অভিনব ও নতুন ধারণার উদ্দ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
জুয়েল রানা/আরকে