স্বামী-সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় শাহিনুর বেগম
কোনোভাবেই থামছে না পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার বাসিন্দা শাহিনুর বেগমের কান্না। স্বামী ও সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তিনি।
শনিবার (২২ জুলাই) সকালে দুই ছেলে তার স্বামীকে নিয়ে চিকিৎসা করাতে বরিশালের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। দুপুরে শাহিনুর বেগমের কাছে খবর আসে সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্বামী সালাম মোল্লা (৬০) ও এক ছেলে শাহীন মোল্লা (২৫) নিহত হয়েছেন।
নিহত সালাম মোল্লার ছোট ছেলে রাসেল মোল্লা বলেন, বাবার চিকিৎসার জন্য বাবা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে বরিশাল যাচ্ছিলাম। আমি চালকের পেছনের সিটেই ছিলাম। বাস ছাড়ার পর থেকে চালক বাড়তি যাত্রী ওঠানোর জন্য বাসের সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলছিল। গাড়ি চালাতে তিনি অমনোযোগী ছিলেন। বাসটি ছত্রকান্দা স্ট্যান্ড পার হওয়ার পরই অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। আল্লাহর রহমতে আমি বাসের জানালা দিয়ে বের হতে পারলেও ঘটনাস্থলেই আমার বাবা ও বড় ভাই মারা যান।
শুধু শাহিনুর বেগমের বাড়িতেই নয়। এরকম শোকের মাতম চলছে ভান্ডারিয়া উপজেলার আটটি বাড়িতে। খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় বাস দুর্ঘটনায় নিহতদের অধিকাংশই পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার। নিহত যাত্রীদের বাড়িতে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। স্বজনরা শেষবারের মতো দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। সেখানকার হৃদয়বিদারক দৃশ্য যে কারও চোখে পানি নিয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, শনিবার (২২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ঝালকাঠি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ছত্রকান্দা নামক স্থানে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের একটি পুকুরে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজন নারী, ছয়জন পুরুষ ও তিন শিশুসহ ১৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় ৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
আবীর হাসান/এমজেইউ