প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফর : তোরণ-ফেস্টুনে কোটি টাকা ব্যবসার আশা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২ আগস্ট রংপুরে আসছেন। সেদিন রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য দেবেন সরকারপ্রধান। এই জনসভাকে ঘিরে তোরণ-ফেস্টুন-ব্যানারে কোটি টাকারও বেশি ব্যবসার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সাড়ে চার বছরের বেশি সময় পর শেখ হাসিনা রংপুরে আসছেন। দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, তিনি রংপুর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করবেন। তাই রংপুরবাসী শেখ হাসিনাকে বরণ করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। জনসভায় ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

জনসভাকে কেন্দ্র করে শুধু রংপুর মহানগরীতেই শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। তোরণের পাশাপাশি সড়কের মাঝে সড়কবাতি, দুপাশের বিদ্যুতের খুঁটি ও বিভিন্ন দেয়ালে ব্যানার-ফেস্টুনের ছড়াছড়ি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোযোগ আকর্ষণের জন্য চেষ্টার কোনো কমতি রাখছেন না আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছেন তোরণ-ব্যানার-ফেস্টুন। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানিয়ে এসব ফেস্টুন-বিলবোর্ড লাগাচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, মেডিকেল মোড় ও চেকপোস্ট থেকে সমাবেশস্থল, জিলা স্কুল মোড় থেকে পায়রা চত্বর-শাপলা চত্বর হয়ে মর্ডান মোড় পর্যন্ত শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। কোথাও কোথাও বিলবোর্ডেও শুভেচ্ছা পোস্টার লাগানো হয়েছে। দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কেও কয়েকটি তোরণ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকটি রোডে নতুন নতুন তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড লাগানোর কাজ চলছে। ডেকোরেটার্স শ্রমিকরা রাত-দিন কাজ করছেন। পুরো শহরটাই তোরণ, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। প্রেস ও ছাপাখানার দোকানগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিক ও কর্মচারীরা।

মহানগরীর পায়রা চত্বর এলাকার নীতি ডিজিটালের মেশিন অপারেটর মো. শুভ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগের চেয়ে আমাদের কাজ অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তবে কাজ করতে ভালোই লাগছে। কেননা আমাদের কাজগুলো প্রধানমন্ত্রীর চোখে পড়বে।
ডিজাইনার সৈকত ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা দুই শিফটে কাজ করছি। ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সিটি কর্পোরেশনের সব ধরনের কাজ করতে হচ্ছে। কাজগুলো দেখেশুনে করতে হচ্ছে যাতে কোনো ভুল না হয়।

ঢাকা প্রেসের স্বত্বাধিকারী সেলিম বাদশা ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে রংপুরে পর্যাপ্ত কাজ বেড়ে গেছে। দিন-রাত কাজ করতে হচ্ছে, তবুও শেষ করা যাচ্ছে না। আমাদের ডেলিভারি দেওয়া ফেস্টুন-ব্যানার গেট শহর ও শহরের বাইরে স্থাপন করা হচ্ছে। এত কাজ বেড়েছে যে এসব ডেলিভারি দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
রংপুর প্রেস অ্যান্ড প্যানা ডিজিটাল হাউসের ম্যানেজার মশিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রংপুরে আগমনের খবরের পর থেকে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। আগের থেকে কাজ অনেক বেশি। বিশেষ করে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, হ্যান্ডবিলের কাজ দিন-রাত এক করে করতে হচ্ছে।

নীতি ডিজিটালের পরিচালক এনামুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২০ তারিখ থেকে আমাদের কাজের চাপ বেড়ে গেছে। আমরা ধারণা করতে পারিনি যে রংপুরে এত কাজ হবে। যেহেতু এই জনসভায় অনেক বড় বড় নেতারা আসবেন তাই দক্ষ ডিজাইনার দিয়ে কাজ করছি যাতে কোনো ভুল না হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে বর্তমানে দুই শিফটে কাজ করা হচ্ছে। বাইরে থেকে কিছু লোক এনেও কাজ করানো হচ্ছে। মোট কথা হাউস বন্ধ থাকছে না। যেটা আশা করেছিলাম তার থেকে বেশি কাজ হচ্ছে। এই কয়েক দিনে অর্ধকোটি টাকার কাজ হবে বলে আশা করছি।
এমজেইউ