অবশেষে বন্ধ হলো সেই অবৈধ সিসা তৈরির কারখানা

অবশেষে বন্ধ হয়েছে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত গড়াই নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা সিসা তৈরির অবৈধ কারখানা। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকালে কালুখালী উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ওই অবৈধ কারখানাটি বন্ধ ঘোষণাসহ মালামাল জব্দ করে।
অভিযান পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. সজীব।
জানা গেছে, কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া এলাকায় গত ৪ মাস আগে প্রায় ৩৩ শতাংশ জমিতে এই সিসা তৈরির কারখানা স্থাপন করা হয়। পুরাতন ব্যাটারি গলিয়ে সিসা তৈরির এই কারখানা পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন যাবৎ। বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরোনো ব্যাটারি কিনে এখানে এনে ভেঙে প্লাস্টিক আলাদা করে সিসা সংগ্রহ করা হয়। রাত ১১টার দিকে ছাই পুড়িয়ে সিসা তৈরি করা হয়। ব্যাটারি পোড়ানোর ধোঁয়ায় কারখানাটির আশ-পাশের এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। রোগাক্রান্ত হয়ে ২০/২৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৫/২০ টি গরু মারা যায়। এখনো ৫/১০টি গরু অসুস্থ রয়েছে।
কারখানাটির সৃষ্ট বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশের চরম বিপর্যয় দেখা দিলে এ নিয়ে গত রোববার (৬ আগস্ট) জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘রাজবাড়ীতে অবৈধ সিসা তৈরির কারখানা, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনটি কালুখালী উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে উক্ত অবৈধ সিসা তৈরির কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. সজীব, পরিবেশ অধিদপ্তর ফরিদপুরের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ আনোয়ার, সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান, বিকয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক বিষ্ণু রায়।
প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে কারখানার কর্মচারীরা পালিয়ে যান। পরে গ্রামবাসী কারখানাটি ভেঙে দেন। কারখানায় থাকা মালামাল জব্দ করে পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়ে যায়। এদিকে প্রশাসনের এমন অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. সজীব বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই এই সিসা কারখানাটি এখানে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল। ঢাকা পোস্টসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। আজ কারখানাটিতে অভিযান পরিচালনা করতে গেলে আমাদের উপস্থিত টের পেয়ে কর্মচারীরা পালিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসী কারখানাটি ভেঙে দেয়। এ সময় কারখানার কিছু মালামাল জব্দ করে পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়ে যায়।
মীর সামসুজ্জামান/আরএআর