শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা : ৭ বছর পর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

দীর্ঘ ৭ বছর পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জঙ্গি হামলা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে কিশোরগঞ্জের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
মামলার পাঁচজন আসামির উপস্থিতিতে বাদীসহ ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক।
এর আগে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মামলার ৫ আসামি জেএমবি সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধি ওরফে সুভাস ওরফে জাহিদ, আনোয়ার, মো. সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল ওরফে নুরুল্লাহ এবং জাহেদুল হক ওরফে তানিমকে আদালতে আনা হয়। আদালতে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
শোলাকিয়া জঙ্গি হামলার ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে পুলিশের দায়ের করা মামলায় ২৪ আসামির মধ্যে বিভিন্ন সময় বন্দুকযুদ্ধে ১৯ জন মারা যান। তাদের বাদ দিয়ে এ ঘটনায় পুলিশ ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে পাঁচজনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করে। কিন্তু সকল আসামিকে একসঙ্গে আদালতে হাজির করতে না পারায় দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হচ্ছিল না।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাতে জঙ্গিরা পুলিশের নিরাপত্তা চৌকির ওপর গ্রেনেড হামলা চালায়। এ সময় চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে পুলিশের দুই সদস্য জহিরুল ইসলাম ও আনসারুল হককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যদের সঙ্গে জঙ্গিদের বন্দুকযুদ্ধ চলে অনেকক্ষণ। জঙ্গি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিক মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর পুলিশের গুলিতে জঙ্গি আবির রহমান নিহত হন।
জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় আটজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা তৎকালীন পাকুন্দিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দিন বাদী হয়ে জঙ্গি শফিউল ইসলাম ও জাহিদুল হক তানিমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা জঙ্গিদের আসামি করে মামলা করেন। ২৪ আসামির মধ্যে বিভিন্ন সময় বন্দুকযুদ্ধে ১৯ জন মারা যান। তাদের বাদ দিয়ে এ ঘটনায় পুলিশ ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে পাঁচজনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আবু নাসের মো. ফারুক সঞ্জু জানান, ঘটনার ৭ বছর পরে হলেও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। দ্রুত মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। দ্রুত চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচার কাজ শেষ করা হবে।
আরএআর