তিন ফর্মুলায় আগামী নির্বাচন হতে পারে : রোবায়েত ফেরদৌস

তিনটি মডেল বা ফর্মুলায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তিনি বলেছেন, তিনটি মডেল নিয়ে বিভিন্নভাবে আলোচনা, লেখালেখি ও কথাবার্তা হচ্ছে। এর বাইরে অন্য কোনো মডেল থাকলে সেটাও শোনা যেত। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা অপরিহার্য হয়ে গেছে।
সম্প্রতি রংপুর আরডিআরএস ভবনের তিস্তা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা’ শীর্ষক বিভাগীয় কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। ভোটার অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড অ্যাকটিভ সিটেজেনারি প্রকল্পের আওতায় দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ঢাবির অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে যদি নির্বাচন হয় তাহলে এই সরকার দুই মাস ক্ষমতায় থাকবে। তারপর সরকারকে আবার নির্বাচন দিতে হবে। যেটা বিএনপি একবার করেছিল, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে। পরে বিএনপিকে আবার নির্বাচন দিতে হয়েছে। এটা হচ্ছে ফাস্ট পয়েন্ট বা মডেল।
তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় পয়েন্ট হচ্ছে রাজনীতিতে সব টেবিলের ওপরে হয় না, টেবিলের নিচেও অনেক কিছু হয়। অনেক ধরনের নেগোসিয়েশন, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে গত নির্বাচনে (২০১৮ সালে) সেটা হয়েছিল। সেবার বিএনপিকে ৯০টি আসন দেওয়ার কথা হয়েছিল। ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীরা সেই কথা শুনে নির্বাচনে এসেছিলেন। কিন্তু সেই কথা রাখা হয়নি। এইবার বলা হচ্ছে, ১১০-১২০টি আসন দেওয়া হবে এবং কোন কোন আসন সেটা ঠিক (নির্ধারণ) করে দিয়ে দেওয়া হবে।
এই গবেষক বলেন, থার্ড পয়েন্ট বিএনপিরা এখনো সমস্ত শক্তি ব্যয় করেনি। তফসিল ঘোষণার পর বিএনপিসহ সমমনা সব রাজনৈতিক দল মিলে সর্বশক্তি দিয়ে হলেও সরকারের পতন ঘটাবে। তখন কিন্তু নির্বাচন হবে দুই বছর পরে, এখন আর হবে না। সিভিল মিলিটারি ব্যাক, যেটা আমরা ওয়ান-ইলেভেনে দেখেছি সেইরকম একটা মডেল আসবে। পরে তারা হয়ত নির্বাচন আয়োজন করবে, তবে সেটা এক থেকে দুই বছর সময় লাগতে পারে।
রোবায়েত ফেরদৌস জানান, বর্তমানে এই তিনটি মডেল নিয়ে বিভিন্নভাবে আলোচনা, লেখালেখি ও কথাবার্তা হচ্ছে। এর বাইরে অন্য কোনো মডেল থাকলে সেটাও শোনা যেত। নির্বাচন কমিশন এর আগে ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে আলোচনা করেছে, সেখানে তিনিও ছিলেন। যদি আবার আলোচনার সুযোগ হয়, তাহলে সাধারণ মানুষসহ সচেতন নাগরিক সমাজের প্রত্যাশার কথাগুলো নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন তিনি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রংপুর জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি রংপুর জেলার সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) রংপুর জেলার আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ জাসদ রংপুর জেলার সভাপতি গৌতম রায়, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি রংপুর জেলার সম্পাদক কাফি সরকার, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তৌহিদুর রহমান। সঞ্চালনা করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার দিলীপ কুমার সরকার।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ