কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়ে বলল, যখন ডাকব তখনই আসবি
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান (ছদ্মনাম)। বুধবার (০৭ এপ্রিল) দুপুরে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মুন্সিগঞ্জ আদালতে মামলা করতে এসেছেন। তার অভিযোগ, অপহরণ করে কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়েছেন প্রতিবেশী যুবক।
নুসরাত সিরাজদিখান উপজেলার কাকলদি গ্রামের জনৈক ব্যক্তির মেয়ে। নুসরাত জাহান জানান, ৩০ মার্চ মালখানগর উচ্চ বিদ্যালয়ে অনলাইন পরীক্ষার অ্যাসাইনমেন্টের খাতা জমা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যান প্রতিবেশী সাইদুল ইসলাম ও তার ভাবি সাথী বেগমসহ ৪-৫ জন। সাইদুল একই গ্রামের এসহাক আলীর ছেলে।
নুসরাত বলেন, সাইদুল ও সহযোগীরা আমাকে তুলে নিয়ে নির্জন ঘরে আটকে রাখেন। পরে একটি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি স্বাক্ষর করতে না চাইলে সাইদুল চাকু বের করেন। আমি তাকে বলি, মেরে ফেললেও স্বাক্ষর করব না। পরে সাইদুল বলেন কাগজে স্বাক্ষর না করলে তোর বাবাকে খুন করব। পরে স্বাক্ষর করি। স্বাক্ষর করার পর সাইদুলকে বলি, আমাকে ছেড়ে দেন। তখন সাইদুল বলেন, তুমি তো কাবিননামায় স্বাক্ষর করেছো। এখন থেকে তুমি আমার স্ত্রী। ঘরের স্ত্রীকে তো আর আটকে রাখা যায় না। আমি যখন ডাকব, তখনই আসবি। পরে সাইদুলের ভাবি আমাকে বাড়ির সামনে রেখে চলে যান।
নুসরাতের বাবা জানান, ৩০ মার্চ বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় মেয়ে। দুই ঘণ্টা পর বাড়িতে ফিরলে দেরি কেন জিজ্ঞাসা করতেই কেঁদে দেয়। জানায় সাইদুল ও তার ভাবি আমাকে খুন করবে বলে কাবিননামায় তার স্বাক্ষর নিয়েছে। পরে আমার স্ত্রী ও প্রতিবেশী কয়েকজনকে পাঠালে একটি কাগজ দেখিয়ে সাইদুল জানায় আপনার মেয়ের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বিষয়টি মধ্যপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। কোনো ব্যবস্থা নেননি। মেয়ের বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানানোর পর মামলা করতে বলেন। এজন্য আদালতে মামলা করতে এসেছি। এসে দেখি আদালত বন্ধ। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। আদালত বসলে মামলা করব।
মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আব্দুল করিম বলেন, আমার কাছে মেয়ের বাবা এসেছিল। আমি ছেলের খোঁজ নিতে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবুল বেপারী আর দিলুকে পাঠিয়েছিলাম। তারা গিয়ে ছেলের বাড়িতে কাউকে পাননি। এজন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।
ব.ম শামীম/এএম