‘আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব বলছি’

‘আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব বলছি, তুমি ভালো আছ? উপজেলার টিসিবির ডিলার কতজন? আমাকে তথ্য দাও’— এই বলে মুঠোফোনে কল করে এক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছিল। এর কিছু পরেই ক্লোন করা হয় ইউএনওর সরকারি নম্বর। টাকা দাবি করা হয় ব্যবসায়ীর কাছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জয়পুরহাটে এমন ঘটনা ঘটেছে। জেলার আক্কেলপুর উপজেলার নবাগত ইউএনও মো. মনজুরুল আলমের সরকারি মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করেছে প্রতারক চক্র।
এ নিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করতে ইউএনওর ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে লেখা আছে ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার, আক্কেলপুর এর অফিসিয়াল মোবাইল নম্বর ক্লোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তি আক্কেলপুরের বিভিন্ন ব্যাবসায়ীদের কাছে পাইকারি দামে আলু বিক্রি করবে মর্মে টাকা দাবি করছে। আপনাদের সকলকে সাবধানতা অবলম্বন করার পাশাপাশি এসব চক্র থেকে দূরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। এছাড়া কেউ এ ধরনের জালিয়াতি চক্রের সন্ধান পেলে তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করছি।’
বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ইউএনও মনজুরুল আলম। তিনি বলেন, একটি ব্যক্তিগত নম্বর থেকে আমার সরকারি নম্বরে কল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের পরিচয় দেওয়া হয়েছিল। একটি তথ্যও নিয়েছিল। পরে ওই নম্বর বন্ধ পাওয়া যায় এবং নম্বরটি উপ-সচিব স্যারের নয়। এরপর আমার সরকারি নম্বর ক্লোন করা হয়।
ইউএনও বলেন, ওই নম্বর ক্লোন করে ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা দাবি করেছে। প্রতারক চক্র ব্যবসায়ীদের কাছে ইউএনও যেসব আলু পাইকারি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টাকা দিয়ে আলু নিয়ে যান বলেছেন।
জানতে চাইলে মনজুরুল আলম বলেন, আজ অভিযানে একটি হিমাগারে ব্যবসায়ী নির্ধারিত সময়ের পরেও ২০০ বস্তা আলু রেখেছেন। ওই আলু আগামীকাল (বুধবার) পাইকারিতে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই আলু বিক্রির কথা কেউ শুনে প্রতারক চক্র আমার নম্বর কল করে অন্য ব্যবসায়ীদের কল করে টাকা দিয়ে আলু নিতে বলেছেন। এ ব্যাপারে এখনও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, স্ত্রী কাণ্ডে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের সাবেক ইউএনও মো. আরিফুল ইসলামকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করার পর তার স্থলাভিষিক্ত হন খাগড়াছড়ির সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মনজুরুল আলম। গত ১ অক্টোবর তিনি ওই উপজেলার ইউএনও পদে যোগদান করেন। নতুন ইউএনও যোগদানের দুইদিন পর সরকারি নম্বর ক্লোন হওয়ার ঘটনা ঘটে।
চম্পক কুমার/এমএএস