কাঁচা ঘরটিও হারানোর শঙ্কায় মোমেনা

দরিদ্র মোমেনা বেগম (৪৫) স্বামীকে নিয়ে থাকেন মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার জাংগালি গ্রামের বাবার বাড়িতে। পরিবার চালাতে প্রতিবেশীদের ছোটখাটো কাজে সহযোগিতার ডাক পেলে বসে থাকেন না। কাজ করে দিলে মেলে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। তা দিয়ে চলে তার সংসার।

মাথাগোঁজার ঠাঁই বলতে আছে একমাত্র কাঁচা ঘর। এত অসহায়ত্বের মাঝেও দিন কাটছিল মোমেনার। এখন মাথাগোঁজার শেষ আশ্রয়টুকু হারানোর শঙ্কায় তার দিন কাটছে।

রোববার (১১ এপ্রিল) সকালে রাজনগরের কামারচাকে হামলায় একই পরিবারের নারী ও বৃদ্ধ গুরুত্বর আহত হন। আহতরা রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী প্রতিবেশী ছুফান মিয়া ও সোলেমান মিয়া একই বাড়িতে বসবাস করেন। সম্পর্কে তারা মোমেনার চাচাতো ভাই। কৌশলে মোমেনার ঘরও ভেতর রেখে নিজেদের বাড়ির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন তারা।

প্রথম দিকে মোমেনার পরিবারের সঙ্গে বেশ ভালো আচরণ করলেও আকস্মিবভাবে খারাপ আচরণ শুরু করেন ছুফান মিয়া ও তার পরিবার। শেষে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতেও তাদের চাপ দেয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার-চেয়ারম্যান সালিস মীমাংসার চেষ্টা করলেও মানেননি ছুফান মিয়া। ফলে মাথাগোঁজার শেষ সম্বল নিয়ে পরিবারটি পড়েছে শঙ্কায়।

এতে আহত হন মোমেনা বেগম, তার ভাই আব্দুল খালিক (৭০) ও ছেলে রমজান আলী (২১)। প্রত্যেকের মাথায় গুরুতর জখম হয়। আহত অবস্থায় রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে রাজনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

এ ব্যাপারে ছুফান মিয়া বলেন, জমি নিয়ে কোর্টে মামলা চলছে। সকালে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে বলেই তিনি কল কেটে দেন। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, একাধিকবার বিরোধ মীমাংসার চেষ্টা করলেও ছুফান মিয়া কোনোভাবেই সমাধান মানেননি। বারবার অসহায় পরিবারটির ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছেন এই প্রভাবশালীরা।

রাজনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হাসিম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। তাৎক্ষণিক কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। আহতরা চিকিৎসাধীন আছেন। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওমর ফারুক নাঈম/এমএসআর