ভুল চিকিৎসায় গরুর মৃত্যু, ভুয়া চিকিৎসকের কারাদণ্ড

আট মাসের গর্ভবতী একটি গরুর জ্বর হয়। স্থানীয় পশু চিকিৎসকের থেকে নেওয়া হয় চিকিৎসা। এতে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা আরও কয়েক ডিগ্রি কমে গরু নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ওই চিকিৎসক আবারও চিকিৎসা দেন। তবে বাঁচানো যায়নি গরুটিকে। চিকিৎসা দেওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যেই মারা যায় গরুটি।
এমন অভিযোগে সনদ যাচাই করে দেখা যায় ওই পশু চিকিৎসক ছিলেন জাল সনদধারী। তিনি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে পশু চিকিৎসার জন্য একমাস প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। আর ওই সনদেই দিচ্ছিলেন পশু চিকিৎসা। চিকিৎসক হিসেবে যা সনদ থাকা দরকার সেটি তার ছিল না। তবে দীর্ঘদিন এমনভাবে চিকিৎসা দিলেও তা নজরে আসেনি কর্তৃপক্ষের। একটি গরু মারা যাওয়ার পর বিষয়টি তাদের নজরে আসে। ওই চিকিৎসক দেওয়া হয় কারাদণ্ড।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের ভূগোইল গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়েছিলেন কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. জান্নাত আরা তিথি। তিনি ওই ভুয়া চিকিৎসকের এক মাসের কারাদণ্ড দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় কালাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাসান আলী সহযোগিতা করেন।
ভুয়া চিকিৎসকের নাম শরিফুল ইসলাম (৩০)। তিনি ভূগোইল গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। তাকে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন কালাই থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারী।
কালাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাসান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভূগোইল গ্রামের মোমেন নামে এক ব্যক্তির ফ্রিজিয়ান ক্রস জাতের আট মাসের গর্ভবতী গাভিটির জ্বর হয়। পরে শরিফুল চিকিৎসা দেন। এতে তাপমাত্রা কমে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক নিচে নেমে যায়। এরপর আবারও তাকে ডাকলে তিনি যে চিকিৎসা দিয়েছিলেন তা ভুল ছিল।
ওই পরিবারের অভিযোগ পেয়ে সব যাচাই করে দেখা যায় শরিফুল একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে খামারি হিসেবে পশু পালনের জন্য এক মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিন্তু ওই সনদেই তিনি পশু চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। এটি তিনি করতে পারেন না। পশু চিকিৎসার জন্য তার কোনো সনদ ছিল না। পরে ইউএনও এসে তাকে একমাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
চম্পক কুমার/আরএআর