যশোর জেলা আ.লীগের সভাপতিসহ ১৮ জনের মনোনয়ন বাতিল

যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনে ৪৬ জন প্রার্থীর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনসহ ১৮ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. আবরাউল হাছান মজুমদার এ ঘোষণা দেন।
রিটার্নিং অফিসারের তথ্যমতে, যশোর-১ (শার্শা) আসনে শতকরা এক ভাগ ভোটার তালিকা ঠিক না থাকায় মনোনয়ন বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহরাব হোসেন ও নাজমুল হাসানের এবং সিআইবির ঋণখেলাপির জামিনদার থাকায় জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এই আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ও জাকের পার্টির সবুর খানের।
যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর শতকরা এক ভাগ ভোটার তালিকা ঠিক না থাকায় এসএম হাবিবুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া টিন নম্বর না থাকা ও আয়কর দাখিল না করায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ)-এর প্রার্থী শামছুল হকের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তৌহিদুজজামান, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহ, জাকের পার্টির সাফাউজ্জামান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আব্দুল আওয়ালের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
যশোর-৩ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর শতকরা এক ভাগ ভোটার তালিকা ঠিক না থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিত কুমার নাথের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া হলফনামা ও আয়করের তথ্যের গরমিল থাকায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী তৌহিদুজ্জামান, তৃণমূল বিএনপির কামরুজ্জামান, জাকের পার্টির মহিদুল ইসলাম এবং বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী শেখ নুরুজ্জামানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কাজী নাবিল আহমেদ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়ের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
যশোর-৪ (অভায়নগর-বাঘারপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর শতকরা এক ভাগ ভোটার তালিকা ঠিক না থাকায় সন্তোষ কুমার অধিকারী মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক বাবুল, তৃণমূল বিএনপির লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) এম শাব্বির আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মন্ডল, ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুছ আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী রনজিৎ কুমার রায়, জাকের পার্টির লিটন মোল্লা, জাতীয় পার্টির জহুরুল হকের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর শতকরা এক ভাগ ভোটার তালিকা ঠিক না থাকায় কামরুল হাসান বারী, আমজাদ হোসেন লাভলু, হুমায়ূন সুলতান এবং সমর্থনকারী অন্য নির্বাচনী আসনের ভোটার হওয়ায় জাকের পার্টির হাবিবুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য্য, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলী, ইসলামী ঐক্যজোটের নুরুল্লাহ আব্বাসী, তৃণমূল বিএনপির আবু নসর মোহাম্মদ মোস্তফা ও জাতীয় পার্টির এমএ হালিমের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর শতকরা এক ভাগ ভোটার তালিকা ঠিক না থাকায় হোসাইন মোহাম্মদ ইসলাম ও আয়কর ফরম জমা না দেওয়ায় আজিজুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, জাতীয় পার্টি জিএম হাসান, জাকের পার্টির সাইদুল জামান, স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচএম আমির হোসেনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
যশোর জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, ছয়টি আসন থেকে ৪৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ২৮ জনের মনোনয়ন বৈধ পাওয়া গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে আপিল করতে পারবেন।
এ্যান্টনি দাস অপু/এমজেইউ