বার না ফেলায় রেললাইনে উঠে পড়ে পুলিশ ভ্যান

জামালপুরে পুলিশ ভ্যানে ট্রেনের ধাক্কায় এক কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে। শহরের শেখেরভিটা রেলক্রসিংয়ে লোহার বার (গেট) না ফেলায় রেললাইনে উঠে পড়ে পুলিশের গাড়ি, এতে দুর্ঘটনায় আহসানুল হক নামের ওই পুলিশ কনস্টেবল মারা যান। রোববার (৩ ডিসেম্বর) ভোর সকাল ৪টা ১৩ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার তদন্তে সিসিটিভির একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের গাড়িটি শহরের মির্জা আজম চত্বর থেকে পাঁচ রাস্তা মোডড়ের দিকে যাচ্ছিল। শেখেরভিটায় ক্রসিংয়ের বার ওঠানো ছিল তাই পুলিশের ভ্যানটি লাইনে উঠে পড়ে। এ সময় দেওয়ানগঞ্জগামী লোকাল ট্রেন পুলিশ ভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন দুই পুলিশ সদস্যকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে আহসানুল হককে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মো. আহসানুল হক নেত্রকোণার কমলাকান্দা উপজেলার রাজনগর গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের ছেলে।
জামালপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, শেখেরভিটা রেলক্রসিংয়ে তিনজন গেটকিপার ৮ ঘণ্টা করে দায়িত্ব পালন করেন। ওই রাতে হামিদুর রহমান নামে এক গেটকিপারের দায়িত্ব ছিল। এ দুর্ঘটনার পরেই ওই গেটকিপার পালিয়ে গেছেন। বর্তমানে গেটকিপারের দায়িত্ব পালন করছেন রেলওয়ে ভারপ্রাপ্ত মেইল মজনু মিয়া।
মজনু মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমি এখানে চলে এসেছি। এসে দেখি এই অবস্থা, পরে লাইন ক্লিয়ার দিয়ে দুটি ট্রেন পার করি। আমি আসার পরে গেটকিপার কেউকে দেখিনি। আমি এখনো এই জায়গায় দায়িত্ব পালন করছি।
রেলক্রসিংয়ের পাশেই সিএনজি চলিত অটোরিকশার স্ট্যান্ডে থাকা কয়েকজন চালক বলেন, রেলগেটের ট্রেন আসার আগে কোনো বেরিকেড দেখিনি। মনে হয় গেটম্যান ঘুমিয়েছিল। পুলিশের গাড়ি পাঁচ রাস্তার দিকে যাচ্ছিল। পুলিশের গাড়িটি লাইনের ওপর উঠলে ট্রেন এসে ধাক্কা দেয়। পুলিশের গাড়িতে আরও কয়েকজন পুলিশ ছিল। দুইজন পুলিশ বেশি আঘাত পেয়েছিল।
জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তা মো. উজ্জল ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে গেটকিপারের দায়িত্ব পালন করছেন হামিদুর রহমান। এ ঘটনায় ঢাকা থেকে তদন্ত কমিটির লোক আসছে। ময়মনসিংহ থেকে একটি টিম এসেছিল তারা এসে দেখে গেছেন।
জামালপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকালের রেল ও পুলিশ ভ্যানের দুর্ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় একজনকে আসামি করা হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত চলছে।
রকিব হাসান নয়ন/আরকে