ইফতার বিক্রিতে ধস

মহামারি করোনার ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। অদৃশ্য এ ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারাদেশের মতো রংপুরে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন চলছে। প্রশাসনের কঠোর অবস্থানে মানুষের আনাগোনা কমেছে সড়কে। তবে পবিত্র মাহে রমজানের ইফতার কিনতে অনেকেই বিকেলের পর বাসা থেকে বের হয়েছেন। লকডাউনে অনেক দোকান বন্ধ থাকায় এবার চাহিদার তুলনায় নগরীতে ইফতার বিক্রির দোকানের সংখ্যা কম। ধস নেমেছে ইফতার বিক্রিতে।
করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি রোধে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে মাহে রমজানে প্রথম দিন থেকে শুরু হয়েছে ইফতার সামগ্রীর বিকিকিনি। নগরীর বিভিন্ন এলাকাতে স্বাস্থ্যসম্মত বাহারি ইফতার সামগ্রীর পরসা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ইফতার কিনতে আসা ক্রেতারা বলছেন, পছন্দমতো এবার ইফতার কেনার সুযোগ কম। সব জায়গাতে তাড়াহুড়ো পরিস্থিতিতে ইফতার বিক্রি চলছে।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল তিনটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত রংপুর নগরীর ধাপ, কাচারি বাজার, পায়রা চত্বর, শাপলা চত্বর, গ্রান্ড হোটেল মোড়, লালবাগসহ বেশ কিছু এলাকায় হোটেল রেস্টুরেন্টের দোকানের পাশাপাশি অস্থায়ী ইফতারের দোকান দেখা গেছে। বিকেল ৫টার মধ্যেই এসব ইফতার দোকান বন্ধে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হলেও ছয়টার পরও অনেক স্থানে ইফতার বিক্রি করতে দেখা যায়।
সরেজমিনে নগরীর ধাপ বাজার, মেডিকেল মোড়, কাচারি বাজার, শাপলা চত্বরসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ছোট পরিসরে ইফতার বিক্রির অস্থায়ী দোকান সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এসব দোকানে আগের মতো সাজসজ্জা ও জৌলুস নেই। নেই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে হাকডাক। যেন ইফতার কেনাবেচা নিয়ে ছিল না চিরচেনা উৎসবের আমেজ। বেচাকেনাও তেমন হয়নি।
বেশির ভাগ ইফতারের দোকানে ছোলা, বুন্দিয়া, বাহারি জিলাপি, রকমারি চপ, পেঁয়াজু, মসকোট হালুয়া, ছানার পোলাও, নিমকি, চিড়াভাজা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া মোড়ে মোড়ে বিক্রি হয়েছে মুড়ি, কলা ও খেজুরসহ ইফতারের প্রয়োজনীয় তরলপানীয়।
নগরীর শাপলা চত্বরে নিউ লাকি হোটেলের মালিক লাভলু ইসলাম বলেন, করোনা মহামারির কারণে সীমিত পরিসরে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বেকারি মালিকরা অস্থায়ী দোকান বসিয়েছেন। লকডাউনের কারণে দোকানগুলোতে ভিড় দেখা যায়নি। সরকারি নির্দেশনা মেনে ইফতার সামগ্রীর বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্রেতাদের তেমন চাপ নেই। গতবারের তুলনায় এবার বেচাকেনা আরও কমেছে।
কাচারি বাজার মৌবন ইফতার দোকানে কথা হয় স্থানীয় সংবাদকর্মী মেজবাহুল হিমেলের সঙ্গে। ঢাকা পোস্টকে এই সাংবাদিক বলেন, করোনার কারণে বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ। কিন্তু ইফতার কিনতে বের হয়েছি। কোথাও তেমন ভিড় নেই। দ্রুত ইফতার নিয়ে চলে যাচ্ছি।
নগরীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে ইফতার কিনতে আসা মানুষদের দ্রুত ঘরে ফিরতে দেখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে পুলিশ চেক পোস্ট থাকায় পুলিশের জিজ্ঞাসা এড়াতে অনেকেই বাড়ির কাছাকাছি দোকান থেকে ইফতার কিনেছেন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএম