শেয়ালের কামড়ে আহত ১৪, একজনের অবস্থা গুরুতর

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শেয়ালের কামড়ে ১৪ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্য সোয়েব মোল্লা নামে এক ব্যক্তিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মহাখালী হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত উপজেলা ও পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় থেকে ১৪ জন রোগী শেয়ালের কামড়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শিয়ালের কামড়ে আহতরা হলেন- পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকার সোয়োব মোল্লা (৫০), কাজী আল আমিন (৪১), শুভ (২৪), আলম (২১),তমাল খা (২৩), চন্ডিবের, অনিক মোল্লা (২৫), পুলতাকান্দা এলাকার সোলেয়মান (৩৬), ভৈরবপুর গ্রামের আরমান (২৬),মধ্যচর গ্রামের সোহেলা বেগম (৩০), রুবেল (২৮), ফরিদ মিয়া (৪৩), জামালপুর গ্রামের মোশারফ (৩৫), এছাড়া পাশ্ববর্তী রায়পুরা উপজেলার তানভীর (২৬),উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের রবিন মিয়া (১৯)।
এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ভৈরব পৌর শহরের পুলতাকান্দা, ভৈরবপুর, চন্ডিবের এলাকা ও উপজেলার শিমুলকান্দি, মধ্যচর, জামালপুর এলাকায় শেয়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ১৪ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্য একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মহাখালী হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
শেয়ালের কামড়ে আহত পৌর শহরের চন্ডিবের মোল্লা বাড়ির অনিক মোল্লা বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার বাসার ভেজা কাপড় শুকাতে অন্য বাসাতে যাওয়ার সময় যখন বাসার গেট খুলি ঠিক তখনই হঠাৎ একটি পাগলা শেয়াল দৌড়ে এসে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তখন আমি আমার সঙ্গে থাকা বালতি দিয়ে শেয়ালটিকে আঘাত করে দূরে সরিয়ে দেই। কিন্ত তাতেও সে থামেনি পরবর্তীতে আবার শেয়ালটি দৌড়ে এসে আমার হাত ও পায়ে কামড় দেয়। তারপর তার কাছ থেকে বাঁচতে আমি দৌড়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পাই।
স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন মিয়া বলেন, গতকাল রাত থেকেই ভৈরব পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় শিয়ালের উৎপাত বেড়ে যায়। এছাড়া গতকাল রাত থেকে আজ সারাদিন বৃষ্টি থাকায় সবাই যার যার মত করে ঘরে অবস্থান করছিলেন। রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে আমাদের এলাকায় একটি শেয়াল ৫-৬ জনকে কামড়ে আক্রান্ত করেছে। তারা প্রত্যেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী মোজাম্মেল হক বলেন, শেয়ালের কামড়ের ঘটনায় প্রত্যেকে আতঙ্কে আছি। ভয়ে অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছে না। গত রাতে আমার ঘরের সামনে যখন শেয়াল কামড় দিতে আসে তখন আমি লাঠি বল্লম দিয়ে তাড়া করি। পরে আমি চিৎকার চেঁচামেচি করলে এলাকাবাসী মিলে পাগলা শেয়ালটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সোহরাব হোসেন সৌরভ জানান, উপজেলা ও পৌর শহরের ১৪ জন রোগী শেয়ালে কামড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে আইসিডিডিআরবি ঢাকা মহাখালীতে রেফার্ড করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারের দেওয়া ইমুনিগ্লুভিন টিকা রোগীদের দেওয়া হয়েছে।
সম্ভবত শিয়ালটি রেবিস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। তাতেই সে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে সবাইকে কামড়াচ্ছে। যারা আক্রান্ত তারা দ্রুত ভ্যাকসিন নিলে আর ক্ষতি হবে না। সঠিক চিকিৎসা না পেলে রোগীর মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, শিয়ালের কামড়ে আমাদের এখানে ১৪ জন আহত অবস্থায় এসে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। প্রাথমিক স্টেজে চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
এমএসএ