খালেদ শওকত আলী ও তার স্ত্রীর ৯৫ ভরি স্বর্ণের দাম সাড়ে ৬ লাখ টাকা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র না পাওয়ায় আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসন থেকে ঈগল প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামার অস্থাবর সম্পদের বর্ণনা অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. খালেদ শওকত আলীর নামে ৪৫ ভরি ও তার স্ত্রীর নামে ৫০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। খালেদ শওকত আলীর ৪৫ ভরি স্বর্ণের মূল্য ৪ লাখ টাকা। আর তার স্ত্রীর ৫০ ভরি স্বর্ণের মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। খালেদ শওকত আলীর কাছে থাকা স্বর্ণের প্রতি ভরির মূল্য ৮ হাজার ৮৮৮ টাকা। তার স্ত্রীর কাছে থাকা স্বর্ণের প্রতি ভরির মূল্য ৫ হাজার টাকা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. খালেদ শওকত আলী, শরীয়তপুর-২ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য, সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত প্রয়াত কর্নেল শওকত আলীর ছেলে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক। তার বাৎসরিক আয় ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এরমধ্যে তিনি বাড়ি, এপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় করেন ৬ লাখ টাকা, চিকিৎসা পরামর্শক হিসেবে ২ লাখ টাকা ও মেডিকেল ক্যাম্প, বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার ও সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন। তার ওপর নির্ভরশীলদের বাৎসরিক আয় ৯ লাখ টাকা।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী তিনি এমডি পাস। যা এমবিবিএস এর সমতুল্য। খালেদ শওকত আলী বর্তমানে ৩৭ লাখ ৭১ হাজার ৮৬০ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক। এর মধ্যে খালেদ শওকত আলীর কাছে নগদ রয়েছে ২৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৯ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৬১ হাজার ৭৮১ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ারে রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ রয়েছে ৫ লাখ টাকা। স্বর্ণ রয়েছে ৪৫ ভরি, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। অন্যান্য অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ব্যবসার মূলধন রয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা।
ডা. খালেদ শওকত আলীর স্ত্রী হলফনামা অনুযায়ী বর্তমানে ৩৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪১৮ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক। এর মধ্যে তার স্ত্রীর নগদ টাকা রয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯৭১ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৪৪৭ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ারে রয়েছে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ রয়েছে ১০ লাখ টাকা। স্বর্ণ রয়েছে ৫০ ভরি, যার মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মধ্যে খালেদ শওকত আলীর স্ত্রীর রয়েছে ১টি টেলিভিশন, ২টি ফ্রিজ, ২টি এসি, যার মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আসবাবপত্রের মধ্যে রয়েছে ১ সেট করে সোফা, ডাইনিং টেবিল, ২টি আলমারি ও ৩টি খাট, যার মূল্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও অন্যান্য অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার রয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা।
শরীয়তপুর-২ আসনের একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. খালেদ শওকত আলী ১ কোটি ৭০ হাজার ৮৮৯ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পত্তির মালিক। এর মধ্যে অকৃষি জমি ১৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬১৯ টাকার, দালান (আবাসিক বা বাণিজ্যিক) ৪০ লাখ ৯৯ হাজার ২৭০ টাকার, বাড়ি বা এপার্টমেন্ট ৪৬ লাখ ২৩ হাজার টাকার। খালেদ শওকত আলীর স্ত্রী বা নির্ভরশীলদের নামে কোনো স্থাবর সম্পত্তি নেই।
হলফনামা অনুযায়ী ডা. খালেদ শওকত আলীর নামে কোনো মামলা নেই। তার নামে ব্যাংক ঋণ রয়েছে ১৪ লাখ ৩৮ হাজার ৫৭৯ টাকা।
প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আসনের ১ শতাংশ ভোটারের জমাকৃত সই ত্রুটিপূর্ণ থাকায় শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহাম্মেদ তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছিলেন। এরপর নির্বাচন কমিশনের আপিল বিভাগে আপিল করলে ডা. খালেদ শওকত আলীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
সাইফ রুদাদ/এমএএস