স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারলেন স্বামী

নাটোরের গুরুদাসপুরে স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে পাঁচদিন পর মারা গেছেন গৃহবধূ রেবেকা সুলতানা (৩৯)। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে দগ্ধ রেবেকাকে প্রথমে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ রেবেকার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় স্বামী মেহেদী হাসানসহ (৩৫) তিনজনের নামে মামলা দায়ের করেন রেবেকার মা লাবলী বেগম। তবে এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। অন্য আসামিরা হলেন- দেবর তানজিল (৩০) ও শাশুড়ি মেহেরজান (৫৫)।
নিহত রেবেকা গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় বাজারপাড়া মহল্লার নবির সরদারের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামী মেহেদী হাসান একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের চলনালী কান্দিপাড়া গ্রামের জয়নাল হোসেনের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরখানেক আগে মেহেদী হাসানের সঙ্গে রেবেকার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা ধরনের সমস্যা লেগেই ছিল সংসারে। সম্প্রতি যৌতুকের জন্য রেবেকাকে চাপ দিয়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে মেহেদী। এ নিয়ে দুটি মামলাও করেন রেবেকা। তারপর থেকে মায়ের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন রেবেকা। মামলাটি প্রত্যাহার করতে তাদের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায় স্বামী মেহেদী হাসান।
রেবেকার মা লাবলী বেগম বলেন, গত শুক্রবার দুই বছর বয়সী সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে মেহেদী হাসান তাদের বাড়িতে ডেকে নেয় রেবেকাকে। সেখানে যাওয়া মাত্রই স্বামী মেহেদী, দেবর তানজিল ও শাশুড়ি মেহেরজান তার হাত-পা বেঁধে ফেলেন। এরপর মেহেদী প্রথমে সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেন। চাকু দিয়ে হাত পায়ের বিভিন্ন অংশ কেটে দেন। একপর্যায়ে কেরোসিন ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।
গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মরদেহ নাটোরে এসে এখনও পৌঁছায়নি। এ ঘটনায় ১৮ তারিখে স্বামীসহ তিনজনের নামে মামলা হয়েছে। এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
গোলাম রাব্বানী/এএএ