ফরিদপুরে ঈগল সমর্থকদের হামলায় নৌকার ২ জন আহত

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী একে আজাদের সমর্থকদের হামলায় আওয়ামী লীগের নৌকার দুই সমর্থক আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের বিষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নৌকার আহত ওই দুই সমর্থক হলেন, বিষ্ণুপুর গ্রামের কামরুল মোল্লা (৪৩) ও সেলিম শেখ (৪০)। তাদের প্রথমে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এসব অভিযোগ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনে নৌকার প্রার্থী শামীম হক।
আহত সেলিম শেখ জনান, সোমবার রাত ৯টার দিকে তারা কয়েকজন নৌকার লিফলেট বিতরণ করছিলেন। ওই সময় একটি মাইক্রোবাস দেখে তারা নৌকা, নৌকা বলে স্লোগান দেন। ওই গাড়িটির পিছনে কয়েকটি মোটরসাইকেলে হেলমেট পরিহিত তরুণরাও ছিল। তারা নৌকার পক্ষে স্লোগান দেওয়ায় মোটরসাইকেল থামিয়ে হেলমেটধারী তরুণরা নেমে এসে তাদের এলোপাথারি মারধরের পর লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ওয়াহিমুল ইসলাম ফাহিম বলেন, আহত দুইজনের অবস্থা গুরুতর। একজনের মাথায় আঘাত রয়েছে, আরেকজনের শরীরের একাধিকস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে রাতেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক তাদের দেখতে রাত ১১টার দিকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ছুটে আসেন।
শামীম হকের ঘটনার সঙ্গে প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের সমর্থকেরা জড়িত উল্লেখ করে বলেন, এভাবে একের পর এক সন্ত্রাস করছে তারা। এটি ভোট করার জন্য না, ভোটকে ব্যাহত করার জন্য, বানচালের জন্য এবং বিএনপি-জামায়াতের ভোট বর্জনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তারা এসব করছে।
শামীম হক আরও বলেন, আমি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে জানাব। বলব নৌকার পক্ষে ফরিদপুর সদরে যারা কাজ করে তারা মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ফরিদপুরের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও আমি সবাইকে বলব আপনারা ধৈয্য ধরুন, কেউ আইন নিজের হাতে নেবেন না। আমরা আইন-প্রশাসনকে জানাব।
অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের নির্বাচনী সমন্বয়কারী মো. শোয়েবুল ইসলাম বলেন, তারা (নৌকার সমর্থকরা) নিজেরা এ ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে দোষ চাপাচ্ছে। এর আগে সেখানে নৌকার লোকেরাই বরং আমাদের কর্মীদের ওপর বেশ কয়েকটি হামলা করে গুরুতর আহত করেছে। এ ঘটনায় একাধিক মামলাও হয়েছে। এখন পরিকল্পিতভাবে নিজেদের লোকদের ওপর হামলা করে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাইছে নৌকার প্রার্থী। এটি একটি রাজনৈতিক অপকৌশল।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে সোমবার রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। নৌকার পক্ষের লোকদের থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
জহির হোসেন/আরকে