৮ তারিখে কিন্তু আমার এলাকায় আপনার থাকতে হবে

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে অপহরণ চেষ্টা মামলায় জামিনে কারামুক্ত হয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলি আহম্মেদ হাসানুজ্জামান (মানিক) এক পথসভায় বলেছেন, আমি জেলে গেছি কিন্তু আমার জন্য না, দলের জন্য আমার নেতাকর্মীর জন্য। এমন জেল আমি হাজারবার খাটতে রাজি আছি। যারা মিথ্যা মামলা দিয়েছিল আমি তাদের বলতে চাই, 'ভাই, আপনি এভাবে দলের আর নেতাকর্মীদের জ্বালিয়েন না।
‘৮ তারিখে কনে থাকবেন? ৮ তারিখে কোথায় যাবেন? ৮ তারিখে কিন্তু আমার এলাকায় আপনার থাকতে হবে। আপনি যদি আমার এলাকার সন্তান হন, আপনার সঙ্গে কিন্তু দেখা হবে। এমন কিছু কইরেন না যেন, ৮ তারিখের পরে আপনার সঙ্গে আমার কথা বন্ধ হয়ে যায়।
গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) জামিনে মুক্তির পর এলাকায় ফিরে নিজ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এক পথসভায় তিনি এমন বক্তব্য দেন। তার ওই বক্তব্যের ভিডিওটি 'কুতুবপুর ইউপির ফেসবুক' পেজে প্রচার করা হলেও পরবর্তীতে মুছে ফেলা হয়। এরপরই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার প্রতিনিধি আব্দুল মালেক বাদী হয়ে নৌকা প্রতীকের সমর্থক এবং চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিককে (৪০) প্রধান আসামি করে মোট ২২ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া মামলায় ১০০/১২০ অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামানসহ এজাহারভুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত মঙ্গলবার জামিনে মুক্তির পর এলাকায় ফিরে পথসভায় তিনি ওই বক্তব্য দেন।
পথসভায় আলি আহম্মেদ হাসানুজ্জামান বলেন, সংগ্রামী ভাইয়েরা, আপনারা জানেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে কাউকে আটকে রাখা যায় না। সত্যের জয় আছেই আছে। আমরা এই জয়কে আগামী ৭ তারিখের যে দ্বাদশ নির্বাচন, এই নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে আরও একবার ক্ষমতায় নিয়ে আসব। এবং টানা চতুর্থবারের মতো এই জেলার প্রাণপুরুষ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন চাচাকে এমপি বানিয়ে ঘরে ফিরব।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আরও বলতে শোনা যায়, আজকে দেখছি আমার জন্যে কত নেতা-কর্মী আছে সবাই কান্নাকাটি করছে। এর চেয়ে বড় পাওয়া আমার জীবনে আর কিছুই নেই। প্রয়োজনে আমার জীবন আপনাদের জন্য উৎসর্গ করে দেব। দলের জন্য উৎসর্গ করে দেব, নৌকা মার্কার জন্য উৎসর্গ করে দেব। আমরা যেভাবে নির্বাচন করছি, আমরা শান্ত-শিষ্টভাবে আগামী ৭ তারিখ পর্যন্ত আপনারা এই নৌকা মার্কার জন্য সবাই একটু কষ্ট করেন। আমি আপনাদের ভাই, কারও সন্তান, আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। বিগত দিনে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। আপনারা আমার জন্য অনেক করেছেন, অনেক কেঁদেছেন, আমি আপনাদের এই ঋণ দেহের সমস্ত রক্ত দিয়েও শোধ করতে পারব না।
এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমানের সরকারি নম্বরে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, এই বক্তব্যের বিষয়ে আমরা অবগত। পুলিশ জিডি করেছে। আইনগত ব্যবস্থা নিতে তদন্ত হবে।
আফজালুল হক/এমএএস