স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে মারধর ও বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ

নাটোরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাথে সঙ্গ দেওয়ায় সমর্থককে মারধর ও বাড়ি ছাড়া করার হুমকির অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের সমর্থকের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে নাটোর শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন মারধরের শিকার নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের সমর্থক মো. সোহাগ হোসেন।
তিনি ঢাকাপোস্টকে বলেন, রাতে আমাদের এলাকায় আসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শফিক। আমি শুধু তার সাথে সঙ্গ দিয়েছিলাম। পরে রাত ১টার দিকে আমার বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন লোক। আমি সকালে কথা বলব বলে তাদের চলে যেতে বলি। তারা কথা না শুনে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। তারা ২০-২৫ জন ছিল। মুখ কাপড় দিয়ে আটকানো থাকায় কাউকে চিনতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমার কোলে আমার ছোট বাচ্চা ছিল। কোল থেকে বাচ্চাকে ফেলে দিয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি বাড়ির বাইরে একটি গাছ জড়িয়ে ধরে রাখলে সেভাবেই আমাকে মারধর শুরু করে। আমি চিৎকার করলেও তারা থামেনি।
সোহাগ হোসেন বলেন, মারধরের পর আমাকে তারা বলেছে নির্বাচনের আগে বাড়িতে না আসতে। এখন আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
নাটোর ট্রমা সেন্টারের অর্থোপেডিক চিকিৎসক ডা. তারিকুল ইসলাম জানান, দুপুরে পায়ে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হয়ে সোহাগ নামে একজন এসেছিলেন। তার পায়ে আঘাতের কারণে তিনি হাঁটতে পারছিলেন না। পরে তার পায়ে প্লাস্টার করা হয়েছে।
এদিকে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শফিকের দাবি, শুধু সোহাগ নয় ওই রাতে এমন অন্তত ১০ জনকে মারধর ও বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিয়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলকের সমর্থকরা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সোহাগ ওই গ্রামে আমার গুরুত্বপূর্ণ কর্মী। তাকে দরজা ভেঙে কোলে থাকা বাচ্চাকে ফেলে দিয়ে বাইরে নিয়ে এসে বেধড়ক পিটিয়েছে নৌকার সমর্থকরা।
শফিক বলেন, ওই রাত ১২টার দিকে চৌগ্রাম ইউনিয়নের বড়ীয়া গ্রামে আমার সমর্থক জিয়ারুল ও হাসানকে পিটিয়ে সিংড়া থেকে চলে যেতে বলে নৌকার সমর্থকরা। তারা রাতেই ঢাকা চলে গেছে। এছাড়া রাত ১১টার দিকে তেরোবাড়িয়া গ্রামে সাজ্জাদ হোসেনের বাড়িতে ঘরে ঢুকে তাকে খুঁজে আসছে নৌকা সমর্থকরা। সে ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছে না।
এছাড়া শেরকোল ইউনিয়নের ধুলাউড়ি গ্রামে মোফাজ্জল হোসেন নামে আমার এক কর্মীকে মারধর করেছে। এভাবে ওই রাতে অন্তত ১০ জনকে পিটিয়েছে ও হুমকি দিয়ে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক সাংবাদিকদের বলেন, এইসব (হামলার) বিষয়ে আমি কিছু শুনিনি। আগামী ৭ তারিখে সিংড়ার জনগণ বিপুল পরিমাণ ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করবে। তাই আমাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে চাপ প্রয়োগের দরকার নেই, অনিয়ম করারও দরকার নেই। আমরা কর্ম দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে ভোটারদের মন জয় করেছি।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরে পুলিশ ওইসব এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। তবে ভুক্তভোগী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী এসব ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। থানা সার্বক্ষণিক খোলা রয়েছে। আমরা ঘটনাগুলো যাচাই করে দেখছি।
গোলাম রাব্বানী/এমএ