বরিশাল সদরের সব আসন ঝুঁকিপূর্ণ, অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের দাবি

বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সব কয়টি (১৭৬) কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী সালাহউদ্দিন রিপন।
শনিবার (০৬ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবির কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, হুমকি-ধামকি ও বার বার বাধার পরও আমরা কর্মীরা প্রচার-প্রচারণা থেকে সরে যাইনি। কর্মী ও সমর্থকরা ভালোবাসে বিধায় প্রচারণার শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত আমার সঙ্গে আছে।
সর্বশেষ শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাতে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের বাটনা গ্রামে আমার বাড়ির পাশের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে হামলার আগে বাটনা গ্রামে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেয়। পরবর্তীতে জেলা পরিষদের সদস্য শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে সেই মিছিলে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয়রাও ছিল। আর ওই মিছিল থেকেই আমার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। তখন সেখানে যে নারী কর্মীরা ছিল, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার খবরে স্থানীয়রা ছুটে আসলে হামলাকারীরা পলিয়ে যায় এবং তখন দুজন হামলাকারীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে ঘটনার সময় আমি বরিশাল নগরে থাকায় বড় ধরনের হামলা থেকে বেঁচে গেছি। আর রাতের ওই ঘটনার পর আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভীতি সঞ্চার হয়েছে। এ হামলার ঘটনা ছাড়াও সম্প্রতি মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদককে হুমকি দিয়েছেন।
তিনি দাবি করেন, নৌকার প্রার্থী ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভোটকেন্দ্র দখলপূর্বক নির্বাচনে জয়লাভের পরিকল্পনা করছেন।
তবে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর ১৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমার আত্মীয়, তার সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, বরিশালে উৎসমুখর পরিবেশে ভোট হবে, পুরো নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। আর সব কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ কেউ বললেই তো হবে না, এটা ঠিক করবে নির্বাচন কমিশন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার বিষয় ভিত্তিহীন দাবি করে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীসহ তার কর্মীরা বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকে হুমকি দিয়েছিল কেন্দ্র দখল করার। সেই ধারাবাহিকতায় পিকনিক থেকে ফেরার পথে ট্রাকের লোকজন নৌকার কর্মীদের ওপর হামলা চালায় এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
অপরদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মো. সালাউদ্দিন রিপনের কাছে ব্যাখা চেয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। এ আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. শিবলী নোমান খান এ মর্মে ৫ জানুয়ারি নোটিশ প্রেরণ করেন।
সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি বরিশাল নগরের বিএম স্কুল মাঠে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মো. রর রিপনের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রার্থী ভোটের দিন সকাল ৭ টার মধ্যে সদর উপজেলার সমস্ত কেন্দ্র দখল করে নেওয়া এবং মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা বরিশাল সিটি করপোরেশনের সমস্ত নির্বাচনী কেন্দ্র দখল করে নেওয়ার হুমকি প্রদর্শন করেন। যার একটি ভিডিও ফুটেজ নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির দপ্তরে রয়েছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস