পটুয়াখালীর চার আসনে জামানত হারালেন ১৫ প্রার্থী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালীর ৪টি নির্বাচনী আসনে বেসরকারি ফলাফলে জেলায় মোট ২২ জন প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি ও জাসদসহ ১৫ জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন। এর মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসনে ৪ জন, পটুয়াখালী-২ আসনে ৩ জন, পটুয়াখালী-৩ আসনে ৪ জন এবং পটুয়াখালী-৪ আসনে ৪ জন প্রার্থী তাদের জামানত হারান।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. নূর কুতুবুল আলমের নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণায় এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রার্থীকে মোট কাস্টিং ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট পেতে হবে। তা না পেলে ওই প্রার্থী তার জামানত হারাবেন। সে হিসেবে ওইসব আসনে বিজয়ী এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ব্যতীত বাকি ১৪ জন জামানত হারিয়েছেন। এছাড়া পটুয়াখালী-২ আসনে বিজয়ী প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীও জামানত হারিয়েছেন। সবমিলিয়ে ১৫ প্রার্থী তাদের জামানত হারালেন।
পটুয়াখালী-১ (সদর-মির্জাগঞ্জ-দুমকী) আসনে মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টির এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার (লাঙ্গল) ৮০ হাজার ৭৩২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. নাসির উদ্দিন (ডাব) ২৭ হাজার ৮৯২ ভোট পেয়েছেন। বাকি সব প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন- জাসদের প্রার্থী কেএম আনোয়ারুজ্জামান মিয়া (প্রাপ্ত ভোট ৩২০), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী মো. খলিল (প্রাপ্ত ভোট ১ হাজার ২৯৮), সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মুহিউদ্দীন মামুন (প্রাপ্ত ভোট ৩৯৯), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম (প্রাপ্ত ভোট ২৫০৩)। এ আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী লাঙ্গলের সমর্থনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে মোট ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী আ.স.ম ফিরোজ ১ লাখ ২৪ হাজার ২৯২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মহসীন হাওলাদার (প্রাপ্ত ভোট ২৯৫১) জামানত হারিয়েছেন। এছাড়া তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মাহবুবুল আলম (প্রাপ্ত ভোট ১২৯৫) ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের টেলিভিশন প্রার্থী মো. জোবায়ের হোসেন (প্রাপ্ত ভোট ২২৩১) জামানত হারান।
পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী এস.এম শাহজাদা ৮৯ হাজার ১৭১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র ঈগল প্রার্থী আবুল হোসেন পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৫০৮ ভোট পেয়েছেন। বাকি সব প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
জামানত হারানো প্রার্থীরা হচ্ছেন- জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম (প্রাপ্ত ভোট ৩২২), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী মো. নূরে আলম (প্রাপ্ত ভোট ১০৩), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. ছাইফুর রহমান (প্রাপ্ত ভোট ৪১২) ও ন্যাশনাল ফ্রন্টের প্রার্থী এ ওয়াই এম কামরুল ইসলাম (প্রাপ্ত ভোট ১১৯)।
পটুয়াখালী-৪ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মো. মহিব্বুর রহমান মহিব ৬০ হাজার ৮৫৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার ৪৮ হাজার ৫৭৬ ভোট পেয়েছেন। বাকি সব প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
জামানত হারানো প্রার্থীরা হচ্ছেন- জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল মান্নান হাওলাদার (প্রাপ্ত ভোট ৩৫০), জাসদের প্রার্থী বিশ্বাস শিহাব পারভেজ মিঠু (প্রাপ্ত ভোট ২৮১), বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন (প্রাপ্ত ভোট ২৩৩) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল-ইসলাম লিটন (প্রাপ্ত ভোট ৮ হাজার ৬৯৪)।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. নূর কুতুবুল আলম বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জামানত রক্ষা করতে হলে কাস্টিং ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ ভোট পেতে হয়। যেসব প্রার্থী এর কম ভোট পেয়েছেন বিধি অনুযায়ী তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
মাহমুদ হাসান রায়হান/পিএইচ