‘জারত এই কম্বলটা মোক অনেক শান্তি দিবে বাহে’

রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। দিনব্যাপী কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে সড়ক-মাঠঘাট। সেই সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। এক সপ্তাহ ধরে উত্তরের জেলা নীলফামারীর এমন অবস্থা। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছিন্নমূল মানুষের দুর্দশাও বেড়েছে। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কিশোরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ৫০০ শীতার্ত ও দুস্থ-অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে সংস্থাটি।
শীতবস্ত্র বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন নীলফামারীর পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুর, পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র এএসপি মো. সিরাজুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র অধিকারী প্রমুখ।

শীতবস্ত্র পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক বৃদ্ধ বলেন, এই ঠান্ডায় অনেক কষ্টে রাত পার করতেছি। আমার লেপও নাই, তোষকও নাই। কম্বল পেয়ে এই ঠান্ডার কষ্ট কিছুটা লাঘব হলো, আমি অনেক খুশি।
রহিমা বেওয়া নামে এক বৃদ্ধা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মুই কাজ কাম কিছু করিয়ার পাও না বাবা। বেটা-বউ মোক দেখে না। এইবার জারত (শীত) মোর জীবন শ্যাষ। সগায় সরকারের কম্বল পায়, মোর এখান খেতাও (কাঁথা) নাই। এই কম্বল খান পায়া মোর খুব উপকার হইল। এলা এই জারত কম্বলটা মোক অনেক শান্তি দিবে বাহে।’
পুলিশ সুপার গোলাম সবুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি নানামুখী সহমর্মিতামূলক কাজে বাংলাদেশ পুলিশ সর্বদা নিয়োজিত আছে। মানবিক উপহার হিসেবে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। আগামী দিনেও পুলিশ বাংলাদেশের মানুষের সেবায় কাজ করে যাবে। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির অর্থায়নে আমরা এই শীতবস্ত্র বিতরণ করলাম যাতে এই এলাকার মানুষের শীতের তীব্র কষ্ট সামান্য হলেও লাঘব হয়।
অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র এএসপি সিরাজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশা, শীতল বাতাস আর হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। এজন্য অসহায় দুস্থ শীতার্ত মানুষগুলোর শীতের কষ্ট নিবারণে এটি আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।
শরিফুল ইসলাম/এএএ