‘আমার কোনো দোষ নাই, বিনা অপরাধে ৫ বছর জেলে আছি’

‘আল্লাহ সাক্ষী, আমি কিছু করি নাই। সাংবাদিকদের নিউজের কারণে আজ আমাদের এই অবস্থা। ওই মহিলার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আমার কোনো দোষ নাই, বিনা অপরাধে ৫ বছর জেলে আছি।’
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এজলাস থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় এভাবেই চিৎকার করে কথাগুলো বলছিলেন নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার ৫ নং আসামি ইব্রাহীম খলিল বেচু (২৫)। তিনি সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্য ব্যাগ্যা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। এ সময় বেচু ছাড়াও মামলার ১৪ জন আসামি উপস্থিত ছিলেন।
তারা হলেন- সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্য ব্যাগ্যা গ্রামের মো. সোহেল (৩৮), মো. হানিফ (৩০), স্বপন (৪২), মো. চৌধুরী (২৫), মো. বাদশা আলম বসু (৪০), আবুল হোসেন আবু (৪০), মোশারফ (৩৫), মো. সালাউদ্দিন (৩২), মো. রুহুল আমিন (৪০), মো. জসিম উদ্দিন (৩২), মো. হাসান আলী বুলু (৪৫), মো. মুরাদ (২৮), মো. জামাল ওরফে হেঞ্জু মাঝি (২৮) ও মো. সোহেল (২৮)। এছাড়া আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
ইব্রাহীম খলিল বেচুর মা নুর জাহান বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে ৫টা বছর আমার ছেলে কারাগারে আছে। বাড়িতে আমাদের কষ্ট হয়। আমি ন্যায়বিচার চাই।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। আসামিপক্ষের পাঁচজন সাফাই সাক্ষী দিয়েছে। মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ৮ জন আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন তার মধ্যে ইব্রাহীম খলিল বেচুও রয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রছুল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুবর্ণচরে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনায় মামলাটির রায় আজ ঘোষণার কথা ছিল। সকালে আসামিদের হাজির করা হয়। বিচারক শুনানি শেষে ৫ ফেব্রুয়ারি নতুন দিন ধার্য করেন। এ মামলায় কারাগারে রয়েছেন ১৫ জন আসামি। একজন পলাতক রয়েছেন। ভুক্তভোগী নারী ন্যায়বিচার পাবেন বলে আমরা আশাবাদী।
প্রসঙ্গত, পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার রায় আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে ঘোষণার কথা ছিল। রায় প্রস্তুত না হওয়ায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস নতুন দিন ৫ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন জেলা জজ ফাতেমা ফেরদৌস।
হাসিব আল আমিন/আরএআর