ফেনীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত

গত কয়েকদিনের তীব্র শীতের পর ফেনীতে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বুধবার বিকেল থেকে ফেনীর আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টিতে শীতের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও ভাসমান মানুষজন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) জেলায় শীতের তীব্রতা অপরিবর্তিত থাকলেও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন ফেনী আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জয়নাল আবেদীন নামে এক শ্রমজীবী বলেন, শীতের কারণে এমনিতেই সপ্তাহে একদিন কাজ পেতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারপরও রেলস্টেশনে কোনোমতে ঘুমাতে পারছি। হঠাৎ বৃষ্টিতে খুব কষ্ট করতে হচ্ছে।
বয়োবৃদ্ধ রিকশাচালক মমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শীতের মধ্যে বৃষ্টিতে ভিজে রিকশা চালানোর অবস্থা নেই। সন্ধ্যার পর থেকে রোডে তেমন যাত্রীও নেই। তবু পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হয়েছি।
শহরের সদর হাসপাতাল মোড় এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে অন্যান্য দিনের মতো ক্রেতা নেই। বেচা বিক্রি কমে গেলে পরিবার নিয়ে চলা কষ্টকর হয়ে যায়।
এদিকে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে কম দামে গরম কাপড় কিনতে ফুটপাত আর অস্থায়ীভাবে বসা শীতবস্ত্রের দোকানগুলোয় ভিড় করছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। ক্রেতাদের কাছে নতুন পোশাকের তুলনায় চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ থেকে আসা পুরাতন গরম কাপড়ের চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের শহীদ মিনার ও রাজাঝির দিঘির পশ্চিম পাড়ে স্বল্প আয়ের মানুষের পাশাপাশি অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন পুরাতন শীতবস্ত্রের দোকানে ভিড় করছেন। ব্যবসায়ীরাও পুরাতন কাপড়ের গাঁইট খুলে মান বুঝে আলাদা আলাদা করে গরম কাপড়ের দাম হাঁকছেন। সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় শীতের কাপড় পাওয়া যায় এই দোকানগুলোতে।
পুরাতন শীতের কাপড় ব্যবসায়ী রিপন বলেন, মৌসুমের শেষের দিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। প্রতিদিনই ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। পুরাতন পোশাক বলে বেশি দাম পাওয়া না গেলেও প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
ফেনী জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা) সজীব কান্তি রুদ্র ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলায় ১৯ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত সহায়তা উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের উচ্চমান পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া বুধবার বিকেল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজও তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
তারেক চৌধুরী/এএএ