‘বাংলা একাডেমির পুরস্কার আমার কাছে বোঝা মনে হচ্ছিল’
২০১৪ সালে পাওয়া বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার। এরপর থেকেই সারাদেশের সাহিত্যাঙ্গনসহ নাটোরের সচেতন মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বিষয়টি।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নাটোর শহরের অকীলের মোড়ে অবস্থিত বাসভবনে ঢাকা পোস্টকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার কারণ জানিয়েছেন ডা. জাকির তালুকদার।
কথা সাহিত্যিক ডা. জাকির তালুকদার বলেন, বাংলা একাডেমির সম্মান এবং মান নিয়ে সারাদেশের সচেতন মহলে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ এমন প্রতিষ্ঠানের পুরস্কারটাও আমার কাছে খুব বেশি সম্মান বা মর্যাদার মনে হয় না। সেটাকে আমার কাছে বোঝা মনে হচ্ছিল। এই বোঝা আমি বয়ে বেড়াতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রহীনতা, আমলাতান্ত্রিকতা, প্রতিষ্ঠানের মানের নিম্নগামিতা এবং আড়াই দশক ধরে নির্বাচন না দিয়ে নিজেদের পছন্দমতো লোক দিয়ে একাডেমি পরিচালনায় নির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়। এভাবে একটা প্রতিষ্ঠান কী চলতে পারে?
ডা. জাকির তালুকদার বলেন, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের জন্য পাওয়া ক্রেস্ট এবং আর্থিক সম্মানির চেক আজ সকালে ডাকযোগে বাংলা একাডেমিতে ফেরত পাঠিয়েছি।
নাটোরের আলো বাতাসে বেড়ে ওঠা নাটোরের মাটির সন্তান হিসেবে পরিচিত ৫৯ বছর বয়সী জাকির তালুকদার পেশায় একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক। এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পর স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে। চিকিৎসা ও গবেষণায় কাজ করেছেন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তাছাড়া বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও সরকারি চাকরি না করে সাহিত্যকেই ধ্যানজ্ঞান হিসেবে বেছে নেন তিনি।
লেখালেখির শুরু থেকেই তিনি আলাদা এক পথ নির্মাণে সচেষ্ট ছিলেন। তার লেখায় ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে পুরাণের সংমিশ্রণ সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মাত্রা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। পিতৃগণ ছাড়া কুরসিনামা, মুসলমানমঙ্গল, কবি ও কামিনী, ছায়াবাস্তব, কল্পনা চাকমা ও রাজার সেপাই তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
গোলাম রাব্বানী/এএএ